রমজানে ইনসুলিনের ব্যবহার কেমন হবে
সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। রোজার যেমন মানসিক উপকারিতা রয়েছে, তেমনই শারীরিক উপকারিতাও রয়েছে। দিনের বেলায় কম খাদ্য গ্রহণের ফলে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে রমজানের উপকারিতা সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে রমজানের উপকারিতা সম্পর্কে বলেছেন বিআরবি হসপিটাল লিমিটেডে ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চিফ কনসালটেন্ট ডা. এম এ বাশার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।
যাঁরা ডায়াবেটিসের রোগী, অনেকে আসলে দেখা যায় অ্যান্টি-ডায়াবেটিক যে মেডিকেশনগুলো রয়েছে, সেগুলো গ্রহণ করে থাকেন এবং অনেকে ইনসুলিনও গ্রহণ করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে এই রমজানে ইনসুলিন নেওয়ার ক্ষেত্রে বা ওষুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও তারতম্য রয়েছে কি না। সাথে আরেকটি বিষয় জেনে নেব, অনেকের ক্ষেত্রে দেখি যে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে থাকে। এই যে দীর্ঘ সময় ফাস্টিংয়ের কথা বলছি সিয়াম সাধনার মাসে, সে ক্ষেত্রে তাঁরা কোনও সমস্যার সম্মুখীন হন কি না, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. এম এ বাশার বলেন, অ্যাডাল্ট ডায়াবেটিস যেটা হয়, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, সেখানে ইনসুলিনের প্রতি রেজিস্ট্যান্স; ইনসুলিন আছে কিন্তু ইনসুলিন ইজ নট ওয়ার্কিং প্রপারলি। সেখানে দেখা গেছে যে রমজানে যদি রোজা রাখে, তাহলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সটাকে কমিয়ে দেয়। কাজেই ইনসুলিনের পরিমাণটাও কমে যায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ইনসুলিন যা পেত, তার টু-থার্ড ইনসুলিন দিলেই কাজ হয়। এটা একটা ব্যাপার।
ডা. এম এ বাশার বলেন, আরেকটা ব্যাপার হলো, আপনারা জানেন যে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনটি জিনিস দরকার। একটা হলো ড্রাগস, ডিসিপ্লিন (অ্যাকটিভিটিস বা এক্সারসাইজ)। আরেকটা হলো ডায়েট। তিনটিই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি সেহরির সময়; যেহেতু লং টাইম ফাস্টিংয়ে থাকবে, সে জন্য আমাদের এমন খাবার খেতে হবে, খাবারটা যাতে দীর্ঘ সময় আমাদের পেটের ভেতর থাকে। মানে এনার্জিটা যাতে ধীরে ধীরে দেয়, হাইপোগ্লাইসেমিয়ার প্রভাব যাতে না থাকে। আমি আগেও বলেছি, ডোজটাকে সেভাবে অ্যাডজাস্ট করতে হবে। আমরা যদি ট্যাবলেট খাই, ৬০ মিলিগ্রাম খাই, সেখানে রিডিউস করে ৩০ মিলিগ্রাম করে দিতে পারি। এটা রমজান শুরুর আগে, যারা ডায়াবেটিসের ট্রিটমেন্ট করে, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ডোজটাকে অ্যাডজাস্ট করতে হবে। আর পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে ডায়েটটাকেও ঠিক করতে হবে, যাতে ডায়েট দীর্ঘক্ষণ থাকে।
ডা. এম এ বাশার আরও বলেন, ইফতারের সময়, আমরা দীর্ঘক্ষণ খাবার না খেয়ে হুট করে যদি আরম্ভ করি, সেখানে কিন্তু কোনও মতেই রিকমেন্ডেড না ভাজি, ফাস্টফুড বা এ সমস্ত জিনিস খাওয়া। সেখানে আমাদের খেতে হবে এমন খাবার, যেটা নাকি ইজিলি ডাইজেস্টেবল হবে এবং দ্রুত শক্তি জোগাবে। সেখানে আমাদের ফল, শরবত খেতে হবে এবং খাওয়ার পরে একটা ইন্টারভ্যাল দিতে হবে। ইন্টারভ্যাল দেওয়ার পরে আমরা হয়তো এই সময়ে এক্সারসাইজ করে নিতে পারি বা নামাজ পড়ে খাবার খেলাম। লক্ষ রাখতে হবে যাতে পানিশূন্যতা না হয়। পানিশূন্যতা যাতে না হয়, সে জন্য আমাদের মিনিমাম দু-তিন লিটার পানি পান করতে হবে।
রমজানের উপকারিতা সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।