রোজা রেখে দাঁতে ব্যথা উঠলে কী করণীয়
সিয়াম সাধনার এ মাসে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পাশাপাশি মুখের যত্ন নিতে হবে। অনেকের দাঁত ও মাড়িতে সমস্যা রয়েছে। অনেকের মাড়িতে রক্ত পড়ে। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব, রোজা রাখার পর দাঁতে ব্যথা উঠলে কী করণীয়।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে রমজানে মুখের স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলেছেন রাজ ডেন্টাল সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ডা. মো. আসাফুজ্জোহা রাজ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।
হুট করে কারও যদি দাঁতে ব্যথা অনুভূত হয়, সে ক্ষেত্রে কী করণীয়। সাধারণত অনেকে যেটি বলে থাকেন, রমজান মাসে ইফতারের আগ পর্যন্ত ডাক্তারের শরণাপন্ন হচ্ছেন না, কারণ রোজাটি ভেঙে যাবে এ কথা ভেবে। মৃদু ব্যথা যদি থাকে, সেটি অনেকে সহ্য করে যাচ্ছেন। কী করণীয়, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. মো. আসাফুজ্জোহা রাজ বলেন, আমরা যদি সমগ্র বিশ্বের মুসলিম চিন্তাবিদদের গবেষণা দেখি, সেটা দেখে আমরা বলতে চাই, রোজা রেখে দাঁতের অনেক ট্রিটমেন্টই করা যায়। তবে সে ক্ষেত্রে দাঁত তোলা বা সিভিয়ার কোনও সার্জারির ক্ষেত্রে যে ব্লিডিংটা হয়, এই ব্লিডিংয়ে রোগী দুর্বল হয়ে যেতে পারে, সে কারণে আমরা বলে থাকি, বড় ধরনের সার্জারি ইফতারের পরে করার জন্য। অবশ্যই করা যাবে, ইফতারের পর করা যাবে। এই সময়টুকুতে ব্যথা লাঘবের জন্য যেন ডেন্টাল সার্জন নিশ্চিত করতে পারে। সেটা কোনও ওষুধ দিয়ে, যেটা রোজায় সমস্যা করছে না, সে অবস্থা করে তার ব্যথা কমাতে পারে।
ডা. মো. আসাফুজ্জোহা রাজ বলেন, সাধারণত যে ট্রিটমেন্টগুলোতে ব্লিডিংয়ের সম্ভাবনা কম থাকে, সব ট্রিটমেন্টই রোজা রেখে করা সম্ভব। সেটা ফিলিং হতে পারে, প্লেইন স্কেলিং হতে পারে, অনেক ট্রিটমেন্টই রোজা রেখে করা সম্ভব। এমনকি রুট ক্যানালের মতো জটিল ট্রিটমেন্টও রোজা রেখে করা সম্ভব। এখানে তেমন বড় ধরনের ব্লিডিং হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
অনেকে যেটি বলে থাকেন, অনেক দিন ধরে দাঁতের সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু রমজান মাস বিধায় ডাক্তারের শরণাপন্ন হচ্ছেন না। এ ধরনের কিছু রোগী রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে আপনার পরামর্শ কী থাকবে, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. মো. আসাফুজ্জোহা রাজ বলেন, আসলে এক মাস কিন্তু কম সময় না। যারা ব্যথায় ভুগছে বা রাতে ওষুধ খেয়ে আছে, নিজে রোজা রেখে তো সারা দিন খালি পেটেই আছে। তারপর যদি ব্যথানাশক খায় বা অ্যান্টিবায়োটিক খায়, এখান থেকে শুধু রোগীর মুখে নয়, সারা শরীরই কিন্তু অনেকটা হুমকির মুখে পড়ে যেতে পারে এই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে। সে ক্ষেত্রে এ ধরনের ভ্রান্ত ধারণা থেকে বেরিয়ে যদি রোজার সময় মুখে কোনও কষ্ট থেকেই থাকে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট নিতে হবে। বাসায় বসে রোগ পুষে রাখার কোনও সুযোগ নেই। কারণ, আপনার কী রোগ হয়েছে, তার কী ট্রিটমেন্ট পদ্ধতি, ডাক্তার খুব ভালোই বুঝবে যে রোজা রেখে আপনি কতটুকু ট্রিটমেন্ট নিতে পারবেন।
রমজানে মুখের স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।