যেসব লক্ষণ দেখে দ্রুত ডেঙ্গুজ্বরের চিকিৎসা নেবেন
সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বর্ষাকাল শুরু হয়। আর বর্ষাকালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃ্ত্যুর সংখ্যা বেড়ে যায়। বিশেষ করে জুলাই মাসে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অত্যন্ত তীব্র হয়। ডেঙ্গু জ্বর হলো মশাবাহিত ভাইরাল সংক্রমণ। এই ভাইরাসবাহিত এডিস ইজিপ্টাই নামক মশা কামড় দিলে ডেঙ্গু জ্বর হয়।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে যেসব লক্ষণ দেখে দ্রুত ডেঙ্গুজ্বরের চিকিৎসা নেবেন, এই সম্পর্কে কথা বলেছেন আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের ফার্মাকোলজি বিভাগের ক্লাসিফাইড স্পেশালিস্ট ডা. মেজর খোশরোজ সামাদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান দীপা।
কী কী লক্ষণ থাকলে একজন ডেঙ্গু রোগীর খুব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. মেজর খোশরোজ সামাদ বলেন, প্রথমে জ্বর হবে। জ্বর কম অথবা বেশি হতে পারে। ১০৫ ডিগ্রি জ্বরও হতে পারে। চোখের পিছনে ব্যথা হতে পারে। শরীরের মাংসপেশী ও হাড়ে ব্যথা হতে পারে। ক্ষেত্র বিশেষে পেটে ব্যথা হতে পারে। বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে। বুকে চাপ লাগতে পারে বা শ্বাস নিতে কষ্ট হতে হবে। এগুলো হচ্ছে– ডেঙ্গু জ্বরের প্রাথমিক উপসর্গ।
এ ছাড়া ত্বকের নিচে লালচে দাগ হতে পারে। বর্তমান সময়ে কোনো ব্যক্তির এ রকম উপসর্গ থাকলে বলা যেতে পারে তার ডেঙ্গু হয়েছে। এ ছাড়া গাম ব্লিডিং অর্থাৎ নাক ও মুখ থেকে রক্ত পড়তে পারে। মলদ্বার দিয়ে রক্ত বের হতে পারে। বমির সাথে রক্ত হতে পারে। ক্ষেত্র বিশেষে পেটেও পানি আসতে পারে। আর বুকে পানি আসলে রোগীর শ্বাসকষ্ট হবে। এগুলো বৈশিষ্ট থাকলে রোগীর চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করা উচিত।
বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরের কিছুটা ধরন পরিবর্তন হয়েছে। যেমন: মাত্রাতিরিক্ত জ্বর না হয়ে এখন কম জ্বরে ডেঙ্গু হচ্ছে। অনেকের ধারণা কম জ্বরে ডেঙ্গু হয়না। বরং মাত্রাতিরিক্ত জ্বরে ডেঙ্গু হয়ে থাকে। এটা আসলে কোনো ভ্রান্ত ধারণা কিনা, সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. মেজর খোশরোজ সামাদ বলেন, সময়ের বিবর্তনে দুটো জিনিসের একটি হলো মশার বাহক আর একটি ডেঙ্গুর ভাইরাস। এই দুটো বিষয় দেখতে পাচ্ছে যে, মানুষ তার প্রতিপক্ষকে পরাজিত করার জন্য খুব চেষ্টা করছে। এই প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে তার বেঁচে থাকার জন্য ক্রমশ তার কৌশল, রণনীতি, রণকৌশল বদলাচ্ছে। আর এই বদলানোর ফলে জ্বর তার নমুনা পরিবর্তন করেছে। আগে মাত্রাতিরিক্ত জ্বর হতো। এখন মাত্রাতিরিক্ত জ্বর হতে পারে। কিন্তু বাধ্যতামূলকনা। এমন কি জ্বর নাও হতে পারে। তাহলে অন্যান্য লক্ষণ যখন হয়, তখন যদি রোগী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়। তখন রোগী নিজেই মনে করেন যে, তার অন্য কোনো রোগ হয়েছে কিন্তু ডেঙ্গু হয়নি। পরীক্ষামূলক ডায়গনস্টিক সেন্টারে প্রথমদিকে এনএস–১ পরীক্ষা করা হয়। এটা যদি পজিটিভ হয়, চিকিৎসকের ধারণাটা নিশ্চিত প্রমাণিত হয়। তখন আর কোনো দ্বিধা থাকে না।
আর যদি জ্বর ৪ থেকে ৫ দিন হয়ে যায়। এন্টিজেন-এন্টিবডি পজিটিভ হলে। মাত্রাতিরিক্ত জ্বর হওয়াটা বাধ্যতামূলক নয়। তবে এটি হতেও পারে। দ্বিতীয় কথা হলো জ্বরটা মাইল ডিগ্রি হবে। আবার ক্ষেত্রবিশেষে কোনো জ্বর নাও হতে পারে।
জ্বর হওয়ার পর কতদিনের মধ্যে টেস্ট করতে হবে, এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উপরের ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।