গ্রিন কফির উপকারিতা
গ্রিন কফি বেশ কিছু উপকারিতা সম্পন্ন একটি পানীয়। অনেকের কাছে এটি প্রিয় পানীয়। গ্রিন কফি স্থূলতা, রক্তচাপসহ অনেক শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। তাই অনেকের মধ্যে গ্রীন কফি খাওয়ার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। এতে রয়েছে অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান যা শরীরকে সুস্থ রাখে।
গ্রিন কফির মূল উপকারিতা এবং কোনো প্রধান কফি থেকে পাওয়া যায় সে হলো এর উচ্চ গুণগত প্রকৃতি। গ্রিন কফিতে বিশেষভাবে বেশি এন্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়, যা শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার এবং অন্যান্য অসুস্থতা থেকে রক্ষা করতে সহায়ক হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক শরীরের গ্রিন কফি খাওয়ার উপকারিতা।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের রক্তচাপ কমাতে গ্রিন কফি বীজ অথবা এর নির্যাসে থাকা ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডের ক্ষমতা অভাবনীয়। এর পাশাপাশি রক্তনালীর কার্যকারিতাও উন্নত করার প্রমাণ বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া গেছে।
মেদ ঝরায়
কফি পান করা একটি সাধারণ উপায় যা অনেকেই ওজন কমানোর জন্য বেছে নেয়। কফিতে থাকা ক্যাফেইন থার্মোজেনেসিসকে উদ্দীপিত করে যারা নিয়মিত শরীর চর্চা করে থাকেন তাদের শক্ত অনুশীলগুলো করতে সাহায্য করে। অনেক সময় ধরে পাকস্থলি পূর্ণতার পাশাপাশি খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা সাময়িকভাবে হ্রাসের মাধ্যমে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ থেকে বিরত রাখতে সহায়তা করে। শরীরের বিপাক বৃদ্ধি জন্য দায়ী হরমোন অ্যাডিপোনেক্টিন গ্রীন কফি বীজের নির্যাস গ্রহণে বৃদ্ধি পায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
সবুজ কফি বা এর নির্যাসের পরিমিত ব্যবহার রক্তে শর্করার মাত্রা, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা এবং সামগ্রিক লিপিড প্রোফাইল উন্নত করতে পারে। এই কারণগুলির প্রতিটি টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সূত্রপাত বা অগ্রগতির সঙ্গে যুক্ত। গ্রিন কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পারে। এটি বিপাকীয় সিন্ড্রোমের চিকিৎসার জন্যও ব্যবহৃত হয়, যা প্রিডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ডায়াবেটিসের প্রধান কারণ।
উচ্চ কোলেস্টেরল হ্রাস
গ্রিন কফি বীজের নির্যাস কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চমৎকার প্রভাব ফেলে। গ্রিন কফির নির্যাস সাপ্লিমেন্টেশন ব্যবহার করে রোগীদের হাই-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (এইচডিএল) বা ভাল কোলেস্টেরল বৃদ্ধি এবং লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (এলডিএল) বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতে দেখা গেছে।
ত্বকের উন্নতি
গ্রিন কফি বীজ নির্যাস ত্বককে হাইড্রেটেড রেখে তার গুণমান উন্নত করতে সহায়তা করে। ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড শুধুমাত্র ত্বকের আর্দ্রতা বাষ্পীভবন থেকেই রক্ষা করে না, বরং ত্বকে পর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহে সহায়তা করে। ফলশ্রুতিতে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলো ত্বকে পৌছাতে পারে এবং ত্বককে সুগঠিত এবং মসৃণ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহ করতে পারে। গ্রিন কফি বীজের নির্যাস সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বকের নিজেকে রক্ষা করার ক্ষমতাও বাড়ায়।
তারুণ্য ভাব রোধ করে
ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড-এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলো শরীরকে বার্ধক্য প্রক্রিয়ার জন্য দায়ী ফ্রি-র্যাডিকেলগুলো দূর করতে সহায়তা করে। ফ্রি-র্যাডিকেলগুলো ডিএনএ ভেঙ্গে ফেলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের তারুণ্য ভাবকে ক্রমাগত ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।
শক্তি বর্ধক
গ্রিন কফি বীজের নির্যাসে থাকা ক্যাফেইন আপনার দিনটিকে ভালোভাবে শুরু করার জন্য আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় পরিমিত শক্তি সরবরাহ করে। সাধারণ কফিতে ব্যবহৃত ভাজা বীজগুলোর তুলনায় কাঁচা সবুজ কফি বীজগুলোতে কম ক্যাফেইন থাকে। গ্রিন কফি বীজের বর্ধিত ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড জ্ঞানীয় ক্ষমতা বাড়ায় যার ফলে দৈনন্দিন কাজের প্রতি মনযোগ বৃদ্ধি পায় এবং সেগুলো সর্বোত্তমভাবে সম্পাদন করা যায়। অনেকেই দিনের বেলা কাজ করতে গিয়ে শক্তি হারিয়ে ফেলেন। তাদের জন্য গ্রিন কফি সঠিক বাছাই হতে পারে।