চটপটি ও ফুচকা খাওয়ার ১২ নিয়ম
যে খাবারগুলোর কথা ভাবলেই জিভে জল চলে আসে, মনে পড়ে যায় স্কুল বা কলেজের কথা, সেই টক, মিষ্টি, নোনতা ও ঝাল স্বাদের খাবারগুলো হলো চটপটি ও ফুচকা। এই খাবারগুলো খেতে অনেকেই ভালোবাসেন।
প্রোটিন বহুল এই খাবারে এ ছাড়াও ক্যালোরি, চর্বি, কিছু ভিটামিন ও সোডিয়াম থাকে। তবে মজার এই খাবার বেশি খাওয়া শরীরের জন্য খুব ক্ষতিকর। বিশেষ করে, কিডনি ও লিভারের জন্য ক্ষতিকর। এ ছাড়া অতিরিক্ত চটপটি বা ফুচকা খেলে রক্তের কোলেষ্টেরল, ইউরিক এসিডের মাত্রা এবং ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। অনেকের পেটে গ্যাস বা এসিডিটির একটি কারণ হলো অতিরিক্ত চটপটি বা ফুচকা খাওয়া। তবে এত মজার খাবার একেবারে না খেলে হবে? তাই কীভাবে খাবেন, তার জন্য দিচ্ছি কিছু পরামর্শ।
১. খালি পেটে চটপটি বা ফুচকা খাওয়া ঠিক নয়। অনেকে স্কুল বা কলেজে না খেয়ে বের হয় এবং টিফিন বিরতিতে চটপটি বা ফুচকা খায়। অভ্যাসটি খুবই অস্বাস্থ্যকর।
২. চটপটিতে অনেক সোডিয়াম থাকে, তাই এর সঙ্গে আলাদা লবণ বা বিট লবণ কোনোভাবেই খাবেন না।
৩. ফুচকাতে চটপটি ভরে খেলে তাতে চর্বি চটপটির তুলনায় বেশি থাকে। কেননা ফুচকা তেলে ভাজা। আবার শুধু চটপটিতে ওপরে এক বা দুইটা ফুচকা ভেঙে খেলে অনেক ফুচকা খাওয়া থেকে বিরত থাকা যায়। তাই ফুচকা না চটপটি? এই অফারে চটপটিকে বেছে নিন।
৪. চটপটির সঙ্গে শশা, টমেটো, পেয়াজ, লেবুর খোসা, সিদ্ধ ডিম, আলু ইত্যাদি মিশালে চটপটি পরিমাণে কিছুটা কম খাওয়া হয়।
৫. চটপটি বাটিতে না খেয়ে ছড়ানো ছোট থালায় ছোট চামচ দিয়ে অল্প নিয়ে খেলে,কম খাওয়া হয়।
৬. চটপটি নেয়ার আগে থালায় টক পানি আগে নিয়ে তার পর চটপটি নিলে অল্পতেই থালা ভরে যায়। এতে কম পরিমাণ খাওয়া হয়।
৭. তেঁতুলের কেনা সস দিয়ে টকপানি না বানিয়ে, এর পরিবর্তে ফ্রেশ তেঁতুলে ফুটানো পানি ও ঘরের মশলা দিয়ে ঘরের তৈরি তেঁতুল পানি বানানো স্বাস্থ্যকর। বাইরের বেশির ভাগ দোকানে কেনা বোতলজাত সস থেকে তেঁতুল পানি বানায়। আর পানি ফুটানো না হলে সেটি অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ে। তাই বাইরের তেঁতুল পানি এড়িয়ে চলা ভালো।
৮. দিনে যখন তখন চটপটি না খেয়ে বিকেলে খেলে তা তুলনামূলকভাবে ভালো। কেননা যখন খুশি তখন চটপটি খেলে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ হয়।
৯. ফুচকা বা চটপটি খেয়ে প্রচুর পানি খেলে এসিডিটি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
১০. ফুচকা বা চটপটি খাওয়ার আগে সম্ভব হলে বিস্কুট বা পাকা নরম কোনো ফল খেয়ে পেট ভরে ফেলুন,তাতে এগুলো কম খাওয়া হবে।
১১. এক থালা চটপটি বা ফুচকা দুজন ভাগ করে খান, তাতে দুজন এর কম খাওয়া হবে।
১২. পুষ্টির বিচারে এটি একটি মিল (meal) তাই দুপুরবেলা লাঞ্চ হিসেবে মাসে একদিন খেতে পারেন। তাতে মনের স্বাদ একটু মিটবে।
ওপরের পরামর্শগুলো চটপটি খেলে খাওয়ার ক্ষতি হয়তো কিছুটা কমাবে। তবে মনে রাখবেন এই পরামর্শ প্রতিদিনের জন্য নয়। মাসে দুই একবার এমন করা যেতে পারে।
লেখক : পুষ্টিবিদ