প্লাস্টিকজাত সামগ্রী থেকে বাড়ছে স্তন ক্যানসারের আশঙ্কা
প্লাস্টিক ও প্লাস্টিকজাত দ্রব্য থেকে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ছে। প্লাস্টিকে এমন ৪০০ রকম রাসায়নিকের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, যা মানবশরীরের জন্য বিষ। এমনটাই দাবি করা হয়েছে গবেষণায়। ‘দি আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি’র একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, খাদ্যপণ্য ও নিত্যব্যবহার্য অনেক সামগ্রীতেই প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা বা মাইক্রোপ্লাস্টিক খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, যা প্রতিনিয়তই শরীরে প্রবেশ করছে। এই ধরনের প্লাস্টিক ক্যানসার রোগের আশঙ্কা বহু গুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
প্লাস্টিকের দ্রব্য তৈরি করতে ‘বিপিএ’ (বিসফেনল-এ) রাসায়নিকটি ব্যবহার করা হয়। এই রাসায়নিকটি খুব সহজে নষ্ট করা যায় না। তাই সেটি পরিবেশেই থেকে যায়। ক্ষুদ্র আকারে খাবারের সঙ্গে মিশে তা মানব শরীরে প্রবেশ করে এবং নানা রকম রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
‘দ্য আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি’-র তথ্য বলছে, প্রায় ১৬ হাজার রাসায়নিক থাকে প্লাস্টিকে। যার মধ্যে পিএফএএস, প্যারাবেনস, অ্যারোমাটিক অ্যামাইনের মতো অন্তত ৪০০ রকম রাসায়নিক মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এই সব রাসায়নিক প্রতিদিনের ব্যবহারের জিনিসপত্র থেকেই শরীরে ঢুকছে। কিভাবে ঢুকছে?
গবেষকরা জানাচ্ছেন, বাজারে যে চিনি ও লবণ বিক্রি হচ্ছে, তাতেও মিশে রয়েছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। শুধু খোলা বাজারে নয়, অনলাইনেও যে লবণ ও চিনি পাওয়া যায়, সেগুলোতেও প্লাস্টিকের অস্তিত্ব রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
আবার, বাড়িতে অফিসে, স্কুল-কলেজ, কাজের জায়গায় বেশির ভাগ মানুষই প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করেন। প্লাস্টিকের বোতলভর্তি পানিকে প্লাস্টিকের কণা মিশে থাকে, এমন তথ্য আগেই দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের থেকেও সূক্ষ্ম ন্যানোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে বোতলের পানিতে। এদের দৈর্ঘ্য এক থেকে পাঁচ হাজার মাইক্রোমিটারের মতো, যা মানুষের মাথার চুলের চেয়েও সূক্ষ্ম। প্লাস্টিকের বোতলের পানিতে এই সূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণাগুলোই মিশে থাকে। প্লাস্টিকের বোতল থেকে পানি খেলে সেই প্লাস্টিকের কণাগুলো শরীরে ঢুকে রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। ক্ষতিকর সেই সব উপাদান মানুষের শরীরের জন্য বিষ। বাড়িতেও খাবার খাওয়ার জন্যও অনেকে প্লাস্টিকের প্লেট, চামচ ইত্যাদি ব্যবহার করেন। প্লাস্টিকের কাপে চা বা কফি খাওয়া হয়। এইসব থেকেও প্লাস্টিকের কণা শরীরে প্রবেশ করে, যা ক্যান্সারের অন্যতম কারণ বলেই মনে করছেন গবেষকরা। তাই প্লাস্টিকের সামগ্রীর বদলে তার বিকল্প কিছু ব্যবহারেই বেশি জোর দিচ্ছেন তারা।