শীতে ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে শরীরে কী প্রভাব পড়বে
দেশে জাঁকিয়ে শীত নেমেছে। আর এই শীতে ঠান্ডা পানি দিতেই শরীর কাঁপুনি দিয়ে উঠে। অনেকেই আবার মৌসুমের কোনো তোয়াক্কা না করে সারা বছরই হালকা কুসুম পানিতে গোসল করেন। আবার অনেকে শীতেও ঠান্ডা পানিতে গোসল করেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, শরীর ভাল রাখতে ঠান্ডা পানিতে গোসল করারও উপকারিতা রয়েছে। ইদানীং ঠান্ড পানিতে গোসল করা বা মুখ ধোয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে কমবয়সীদের। তবে শীতের সময়ে ঠান্ডা পানিতে গোসল করা কি ভাল? কাদের জন্য উপকারী এবং কারা একেবারেই সে পথে যাবেন না, জেনে নিন।
কোনো রকম অসুখ-বিসুখ না থাকলে এবং অ্যালার্জির মানসিকতা না থাকলে ঠান্ডা পানিতে গোসল করাই যায়। তবে কনকনে ঠান্ডা পানিতে গোসল নয়, স্বাভাবিক তাপমাত্রায় থাকা পানিতে গোসল করলে কোনো ক্ষতি নেই।
২০১৬ সালে ‘প্লস ওয়ান’ বিজ্ঞান পত্রিকায় একটি গবেষণার খবর ছাপা হয়েছিল, তাতে দাবি করা হয়েছিল ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, ঠান্ডা লাগা, সর্দি-কাশির মতো সাধারণ সংক্রামক ব্যধিগুলো ঠেকিয়ে রাখা যায়। এমনকি ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে মানসিক চাপও নাকি কমে, অবসাদজনিত অসুখ ঠেকিয়ে রাখা যায়। বিপাকের হারও নাকি উন্নত হয়। তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে বেশি ঠান্ডা পানিতে গোসল হিতে বিপরীত হতে পারে।
হার্টের রোগ যাদের আছে, অথবা স্ট্রোক হয়েছে আগে, তারা শীতের সময়ে হালকা কুসুম গরম পানিতে করবেন। বেশি ঠান্ডা পানি শরীরে ঢাললে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে আচমকা। ফলে রক্ত সঞ্চালনের গতি ধীর হয়ে পড়বে। সারা দেহের রক্ত সরবরাহের মাত্রা ঠিক রাখতে হদযন্ত্র তখন নিজের গতি বাড়িয়ে দেবে। রক্তচাপ বেড়ে যাবে। অস্বাভাবিক হার্টরেট তখন অচিরেই বিপদ ডেকে আনতে পারে। শীতকালে ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে আগে।
হাঁপানি বা সিওপিডি’র সমস্যা যাদের আছে, তারা ভুলেও ঠান্ডার সময়ে ঠান্ডা পানিতে গোসল করবেন না। এতে শ্বাসের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। ঠান্ডা পানিতে ফুসফুসে সংক্রমণও হতে পারে। আবার ত্বকের অ্যালার্জি থাকলে তা-ও বেড়ে যেতে পারে। দেখা গেছে, যাদের কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস আছে, তারা বেশি ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে ত্বকের প্রদাহ, র্যাশ, চুলকানি অনেক বেড়ে যায়। তাই সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কুসুম গরম পাসিতে গোসল করাই ভাল।