রমজানে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়াসহ কী কী সমস্যা দেখা দেয়
সিয়াম সাধনার এ মাসে সারা দিন না খেয়ে রোজা রাখতে হয়। দীর্ঘক্ষণ পানি পান না করার কারণে অনেকের প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়। এ ছাড়া যাঁরা ক্রনিক বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, তাঁরা বেশ কিছু শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হন। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব, রমজানে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়াসহ কী কী সমস্যা দেখা দেয়।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে রমজানে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়াসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. ফারুক হোসেন মুন্সী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।
সিয়াম সাধনার এ মাসে অনেকের ক্ষেত্রেই দেখি, প্রস্রাবের জ্বালাপোড়ার সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। রমজানে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়াসহ কী কী সমস্যা দেখা দেয়, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. মো. ফারুক হোসেন মুন্সী বলেন, রমজান মাসে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া ছাড়া অনেক সমস্যা হয়ে থাকে। যেমন ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা, প্রস্রাবের রাস্তায় ব্যথা হওয়া ইত্যাদি হয়ে থাকে।
প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই) কেন হচ্ছে, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. মো. ফারুক হোসেন মুন্সী বলেন, এর বহুবিধ কারণ আছে। এর মধ্যে কিছু আছে এগ্রাভেটিং ফ্যাক্টর আর কিছু আছে ডাইরেক্ট ফ্যাক্টর। ফ্যাক্টরগুলোর মধ্যে অরগানিজমের কারণে হতে পারে প্রস্রাবে ইনফেকশন, আমরা যেটাকে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই) বলি। অরগানিজম ছাড়াও কিছু আছে প্রিডিসপজিশন ফ্যাক্টর। যদি একটু বেশি বয়স্ক হয়, যদি তার অন্য কোনও রোগ থাকে; যেমন ডায়াবেটিস বা প্রস্রাবের রাস্তায় পাথর হতে পারে কিংবা তার জন্মগত কোনও ত্রুটি থাকতে পারে, কিংবা সে যদি ক্রনিক কিডনি ডিজিজে আক্রান্ত হয়, কিংবা কোনও পরিবেশগত কারণে হতে পারে, দীর্ঘ সময় পানি না খেয়ে থাকা এবং একটা সময় পর প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া অথবা কিছু আনহাইজেনিক কারণেও তার এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে।
আমরা রমজান মাসে দেখি, দীর্ঘ সময় ফাস্টিং থাকা হচ্ছে; পানিশূন্যতা বা দীর্ঘ সময় পানি না খাওয়ার যে বিষয়টি, সেটি আসলে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. মো. ফারুক হোসেন মুন্সী বলেন, আসলে রমজান মাস, পানি তো একটি নির্দিষ্ট সময় না খেয়ে থাকতেই হবে। শুধু পানি নয়, কোনও খাবার গ্রহণ করা যাবেই না। সে ক্ষেত্রে শরীরে যে পানির পরিমাণ, ২৪ ঘণ্টার যে চাহিদা, সেটা কিন্তু যে সময়টুকু আমরা পানি খাব, সে সময়ের মধ্যে মেইনটেইন করতে হবে। রাতে যে সময় খাবারদাবার অ্যালাউ, সে সময় আমাদের পানির ঘাটতিটা পরিমাপ করে খেতে হবে। যে মানুষটা দিনে দুই বা আড়াই বা দেড় লিটার পানি পান করত, ওই পানিটাই ইফতারের পর থেকে সেহরি পর্যন্ত খেয়ে নেবে। কখন-কীভাবে খাবে, সেই পানি কি একবারে খেয়ে ফেলবে? না। সে যদি ১২ ঘণ্টায় দেড় লিটার পানি খেত, তাহলে সময় ভাগ করে পানিটুকু খাবে।
রমজানে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।