বর্ষাকালে ত্বকের যত্ন: উজ্জ্বলতা বজায় রাখার ১০ টিপস
গরমের প্রচণ্ড উত্তাপের পরে তাপমাত্রা অবশেষে সহনীয় হয়েছে। বর্ষায় প্রকৃতি সাজে নতুন রূপে। চারদিকে বয়ে যায় শীতল হাওয়া। তবে ভুলে যাবেন না যে বর্ষাকাল ত্বকের সমস্যা নিয়ে আসে। আবহাওয়া পরিবর্তন হয়ে যায়। আর্দ্রতার মাত্রা বেড়ে যায়। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের সাথে ত্বকের সামঞ্জস্য করতে সময় লাগে। ত্বকের উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়। তৈলাক্ত এবং ব্রণ-প্রবণ ত্বকে অতিরিক্ত তেল দেখা দেয়।
আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে আপনার ত্বকের যত্নের রুটিন পরিবর্তন করাও গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় ক্লিনজিং, টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিং ছাড়াও কয়েকটি টিপস অনুসরণ করতে হবে। যা পুরো মৌসুমে আপনার ত্বককে স্বাস্থ্যকর রাখবে।
সাবান মুক্ত ক্লিনজার ব্যবহার করুন
সাবান মুক্ত ক্লিনজারগুলো মৃদু হয়ে থাকে। ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ধরে রাখতে পারে। ত্বকের ধরণ যাই হোক না কেন, ময়লা এবং তেল থেকে মুক্তি পেতে বর্ষাকালে সাবান মুক্ত ফেস ওয়াশ ব্যবহার করুন। প্রতিদিন কমপক্ষে ২-৩ বার মুখ ধুয়ে নিন। ত্বক পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন।
এক্সফোলিয়েশন
বর্ষাকালে নিয়মিত এক্সফোলিয়েশন করুন। এটি ত্বকের মৃত কোষগুলো দূর হবে। সপ্তাহে ২-৩ বার আপনার ত্বক স্ক্রাব করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে। যা ত্বকের বিষাক্ত পদার্থগুলো বের করতে সহায়তা করে। ত্বক থেকে মৃত কোষ সরে গেলে স্কিনকেয়ার পণ্যগুলো আরও ভালভাবে শোষিত হবে।
কম মেকআপ ব্যবহার করুন
বর্ষাকালে কম মেকআপ ব্যবহার করুন। ভারী মেকআপ ত্বকের ছিদ্রগুলোকে আটকে রাখবে। এমনকি লিপস্টিক ব্যবহার করাও এড়িয়ে চলুন। এর পরিবর্তে, লিপবাম ব্যবহার করুন। এতে আপনার ঠোঁট ময়েশ্চারাইজড থাকবে।
টোনার ব্যবহার করুন
বর্ষাকালে আদ্রতার মাত্রা বেশি থাকায় ত্বক আঠালো এবং চিটচিটে থাকে। তাই এ সময় স্কিন কেয়ার রুটিনে টোনার ব্যবহার করুন। গ্রিন টি বা গ্লাইকোলিক অ্যাসিডযুক্ত টোনারের সন্ধান করুন। এগুলো ত্বকের পিএইচ স্তর বজায় রাখবে। দাগ এবং ব্রণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। ত্বকের ছিদ্রগুলো ছোট করার জন্য টোনার ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সানস্ক্রিন এড়িয়ে যাবেন না
অনেকেই মেঘলা আবহাওয়ার জন্য বর্ষাকালে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা ছেড়ে দেয়। কিন্তু শক্তিশালী ইউভি রশ্মি সহজেই আপনার ত্বকে প্রবেশ করতে পারে। তাই বর্ষাকালেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। সম্পূর্ণভাবে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য ন্যূনতম ৩০এসপিএফ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। প্রতি দুই ঘন্টা পর এটি পুনরায় প্রয়োগ করতে ভুলবেন না।
প্রাকৃতিক ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন
বর্ষকালে সপ্তাহে অন্তত দুইবার ফেস মাস্ক ব্যবহার করা জরুরি। এতে ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল কমে যাবে। অ্যালোভেরা, গ্রিন টি বা অন্যান্য অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদানগুলো ত্বকে ব্যবহার করুন। এগুলো ব্যাকটিরিয়া থেকে ত্বককে রখা করবে। এ সময় মুলতানি মাটির ফেস মাস্ক ব্যবহার করলে ভাল ফলাফল পাবেন।
ময়েশ্চারাইজার
বর্ষাকালেও ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজন। এটি আপনার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে। বর্ষার ত্বকের যত্নের রুটিনে ময়েশ্চারাইজার যোগ করুন। এতে ত্বক সুস্থ থাকবে। অ্যালো এবং হায়ালুরোনিক অ্যাসিডযুক্ত ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন।
সংবেদনশীল জায়গার যত্ন
আপনার ত্বকের সংবেদনশীল এলাকা, যেমন- ঠোঁট এবং চোখের চারপাশের এলাকা মুখের বাকি অংশের চেয়ে পাতলা। এর মানে এ সব জায়গার অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন। শুষ্কতা থেকে মুক্তি পেতে একটি ঠোঁট স্ক্রাব ব্যবহার করুন। বিশেষ করে, রাতে একটি লিপবাম ব্যবহার করুন। চোখের চারপাশে শুষ্কতা, ডার্ক সার্কেল এবং ফোলাভাব কমাতে আই ক্রিম যোগ করতে ভুলবেন না।
ভিটামিন সি’র ব্যবহার
ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা স্বাস্থ্য এবং ত্বকের সমস্যা দূর করে। এটি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ডায়েটে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যোগ করুন। স্বাস্থ্যকর আভা বজায় রাখতে বর্ষার স্কিনকেয়ার রুটিনে ভিটামিন সি সিরাম যোগ করা উচিত। এটি ব্যাকটেরিয়াগুলোর সাথে লড়াই করে। বার্ধক্যের লক্ষণগুলো দূর করবে।
অ্যান্টিফাঙ্গাল পাউডার ব্যবহার করুন
মুখের যত্নের পাশাপাশি, শরীরেরও যত্নের দরকার। বর্ষাকালে ত্বকে ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমণ বেড়ে যায়। বাতাসের আর্দ্রতায় ত্বক চিটচিটে হয়ে যায়। সংক্রমণ এড়াতে বর্ষা ঋতুতে প্রতিদিন গোসল করার পর কিছু অ্যান্টিফাঙ্গাল পাউডার মেখে নিন। এতে ত্বক সুস্থ থাকবে।
সূত্র- বি বিউটিফুল ডট ইন