বর্ষাকালে মাথার ত্বকের যত্ন নেবেন যেভাবে
বর্ষা গরম থেকে স্বস্তি দেয় ঠিকই। তবে চুল এবং মাথার ত্বকের সমস্যা নিয়ে আসে। অতিরিক্ত আদ্রর্তা চুলের ক্ষতি করে। এ সময় চুলে খুশকির দেখা দেয়। চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে ওঠে। বর্ষাকাল চুল পড়ার কারণ হতে পারে।
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ নিশিতা রাঙ্কার হিন্দুস্থান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, “বর্ষাকালে মাথার ত্বকে ব্যাকটিরিয়া, ছত্রাক বা ভাইরাসের সংক্রমণ হয়। তাই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চুল পড়ে”।
বর্ষাকালে বাতাসে আর্দ্রতার কারণে মাথার ত্বকে ময়লা, ঘাম বা দূষিত পদার্থ লেগে থাকতে পারে। এ জন্য এ সময় মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখুন। আপনার চুল ধোয়ার পরে, সঠিকভাবে শুকিয়ে নিন। কারণ ভেজা চুলে ছত্রাক বেশি সংক্রমণ করে। চুল ধোয়ার জন্য একটি মৃদু, পিএইচ-ভারসাম্যযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। যা আপনার চুলের ধরণ এবং মাথার ত্বকের জন্য উপযুক্ত। এগুলো চুলের প্রাকৃতিক তেলের ভারসাম্য বজায় রাখবে। বর্ষাকালে চুল আলগা করে বেঁধে রাখুন।
বৃষ্টির সময় ভেজা চুল নিয়ে বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলুন। কারণ এটি চুল ভাঙ্গার কারণ হতে পারে। চুল ধোয়ার সময় গরম পানি ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। এতে চুল শুষ্ক হয়ে ওঠে। মাথার ত্বকে জ্বালা হতে পারে। এর পরিবর্তে, হালকা গরম বা ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করুন। অন্যদের সাথে, চিরুনি বা চুলের অন্যান্য আনুষাঙ্গিকগুলো ভাগ করে নেবেন না। এটি মাথার ত্বকের সংক্রমণ বা ছত্রাকের পরিস্থিতি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
চুলে তেল লাগানোর রুটিন
চুলকে মজবুত ও সুরক্ষিত রাখতে আমরা যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন তেল ব্যবহার করে আসছি। কিছু বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেন যে, মাথার ত্বকের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে বর্ষাকালে সপ্তাহে কমপক্ষে দুইবার চুলে তেল দেওয়া উচিত। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ নবনীত হারোর বলেন, “চুলে তেল দিয়ে কয়েক ঘন্টা রাখুন। তারপরে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। বিশেষ করে, বর্ষাকালে তেল চুলের জন্য বেশ উপকারি”। তেল ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে।
খুশকির জন্য
বর্ষাকালে খুশকি মোকাবেলা করার জন্য, ঔষধযুক্ত শ্যাম্পু বেছে নিন। প্রাকৃতিক তেল দিয়ে মাথার ত্বকে ময়শ্চারাইজ করুন। মেথি দিয়ে মাস্ক তৈরি করুন। এটি মাথার ত্বকে লাগিয়ে নিন। এক ঘন্টার জন্য রেখে দিন। মেথিতে থাকা নিকোটিনিক অ্যাসিড আপনার মাথার ত্বককে খুশকি থেকে মুক্তি দিতে পারে।
তৈলাক্ত মাথার ত্বকের যত্ন
অতিরিক্ত তেল থেকে মুক্তি পেতে মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখুন। মৃত ত্বকের কোষগুলো অপসারণ করতে এবং ছিদ্রগুলো বন্ধ করতে সপ্তাহে একবার মৃদু এক্সফোলিয়েটিং স্ক্যাল্প স্ক্রাব ব্যবহার করুন। ভারী কন্ডিশনার বা স্টাইলিং পণ্য ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। তৈলাক্ত মাথার ত্বক থাকলে আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন।
শুষ্ক মাথার ত্বকের যত্ন
সপ্তাহে একবার বা দুইবার নারকেল তেল লাগান। হাইড্রেটিং শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। বেশি পানি পান করুন।
স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য খাবার
প্রোটিন, ভিটামিন এ, সি, ই এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার খান। চর্বিযুক্ত মাংস, মাছ, ডিম, ফলমূল, শাকসবজি, শস্য, বাদাম খান। এগুলো চুলের ফলিকলগুলোকে পুষ্ট করতে সাহায্য করে। চুল প্রাথমিকভাবে কেরাটিন নামক প্রোটিন দিয়ে গঠিত। তাই দুগ্ধজাত পণ্য খাদ্যতালিকাতে রাখুন। চুল পড়ার একটি সাধারণ কারণ হল আয়রনের ঘাটতি। সুতরাং আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন-শাকসবজি খান। চিনিযুক্ত স্ন্যাকস এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলো থেকে দূরে থাকুন। এগুলো স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে না।
সূত্র- হিন্দুস্তান টাইমস