নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রশ্নই আসে না : কৃষিমন্ত্রী
নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের বিধান সংবিধানে নেই। এটি গঠন করার প্রশ্নই আসে না বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
আজ রোববার টাঙ্গাইল শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে সমাজসেবা দিবসের আলোচনাসভা, চেক বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জাতীয় সমাজসেবা দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি নানান আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু আন্দোলন করে, হুমকি দিয়ে সংবিধানের বিধান থেকে আমাদের সরাতে পারবে না। বিএনপি আসুক বা না আসুক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তারা নির্বাচনকে ভয় পায়, নির্বাচনে আসতে চায় না। তবে আমি আশা করি, তাদের সুমতি ফিরে আসবে। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এবং দেশে একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার এমন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে, যার উপর সবার আস্থা থাকবে। এ কমিশন সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে। নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী, প্রশাসনসহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে নির্বাচন কমিশন। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীসহ কারও-ই দায়িত্ব থাকবে না নির্বাচনের বিষয়ে। এ কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে দেশে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। কাজেই কোনো দল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, সে দায়দায়িত্ব তাদের।
‘মুজিববর্ষের সফলতা, ঘরেই পাবেন সব ভাতা’ জাতীয় সমাজসেবা দিবসের এ প্রতিপাদ্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধীসহ অসহায় অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কল্যাণে মানবতার জননী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। এসব ভাতা প্রদানে অনিয়ম ও দুর্নীতি করা যাবে না। ব্যাংকের বা ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার যেভাবেই দেওয়া হোক, এ ভাতা তোলার আগে বা পরে যাতে ঘুষ দিতে না হয়; সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য, জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শক্ত হাতে আইনের প্রয়োগ করতে হবে।
সমাজসেবায় বিত্তশালীদের বেশি করে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের সমাজে অনেক বিত্তশালী রয়েছেন। তাঁদেরও দায়িত্ব পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু দুঃখজনক হলো তাদের অনেকের সমাজসেবার মানসিকতা নেই। তারা বিদেশে টাকা পাচার করছে, বাড়ি কিনছে, ছেলেমেয়েকে সেখানে প্রতিষ্ঠিত করছে। এই বিত্তশালীরা সমাজের বিষফোঁড়া, এদের দূর করতে হবে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনির সভাপতিত্বে অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম এমপি, মো. ছানোয়ার হোসেন এমপি, পুলিশ সুপার সরকার মো. কায়সার, সিভিল সার্জন আফম সাহাবুদ্দিন খান, জেলা সমাজসেবার উপপরিচালক মো. শাহ আলম, পৌর মেয়র এস এম সিরাজুল হক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী প্রমুখ সভায় বক্তব্য দেন।
এর আগে সমাজসেবা দিবস উপলক্ষে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে সার্কিট হাউস থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
অনুষ্ঠান শেষে ৫০ হাজার টাকা করে ২২৭ জনের মধ্যে চেক ও ২০ জনকে হুইলচেয়ার বিতরণ করা হয়।