ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ
বাংলাদেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামে বলিষ্ঠ নেতৃত্বদানকারী ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। বাংলা, বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জন্ম হয়।
শিক্ষা-শান্তি-প্রগতির স্লোগানকে ধারণ করে জন্মের প্রথম লগ্ন থেকেই ভাষার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান, সর্বোপরি স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের ছয় দশকের সবচেয়ে সফল সাহসী সারথি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও প্রচীন ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।
১৯৪৮ সালে পতাকাবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আগামী ৪ জানুয়ারি ২০২২ গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের একেকটি সিঁড়ি বেয়ে ৭৫ বছরে পদার্পণ করল। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শিক্ষা-শান্তি-প্রগতির মূলমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে গৌরবগাঁথা ইতিহাসকে সমুন্নত রাখতে এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার দীর্ঘ রাজনৈতিক পরিক্রমায় বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, চোয়ান্নর প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, আটান্নর আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, ৬ দফার পক্ষে গণঅংশগ্রহণের মাধ্যমে মুক্তির সনদ হিসেবে এই দাবিকে প্রতিষ্ঠা করে। এরপর ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে কারাগার থেকে মুক্ত করে আনা, সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়লাভ এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পরাধীন বাংলায় লাল সবুজের পতাকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অংশ নেয় ছাত্রলীগ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর ছিনতাই হয়ে যায় স্বাধীনতার চেতনা ও গণতান্ত্রিক ধারা।
১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী) দেশে ফিরে স্বাধীনতার চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক ধারা পুনরুদ্ধারে আন্দোলনের সূচনা করেন। ছাত্রলীগ ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অনন্য ভূমিকা পালন করে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ইতোমধ্যে পাঁচ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।
কর্মসূচি ৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ও দেশব্যাপী সংগঠনের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৮টায় ধানমণ্ডি ৩২ নস্বরে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন।
এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের প্রতিনিধিদল টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করবে।
সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার্জন হলে কেক কাটা কর্মসূচি পালন। দুপুর ২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভ উদ্বোধন ও আনন্দ শোভাযাত্রা।
আগামী ৫ জানুয়ারি বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভা। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনের এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ওই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে সরাসরি ভার্চুয়ালি যুক্ত হওয়ার সম্মতি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।
উক্ত আলোচনা সভা প্রতিটি জেলা, মহানগর ও উপজেলার দলীয় কার্যালয়ে প্রজেক্টর এবং সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যার মূল্যবান বক্তব্য ছাত্রসমাজের উদ্দেশে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করবে।
৬ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে পথশিশুদের মধ্যে শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ। বিকেলে ৩টায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি।
৭ জানুয়ারি, শুক্রবার বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে দুঃস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ।
৮ জানুয়ারি, শনিবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অপরাজেয় বাংলা’ সংলগ্ন বটতলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি।