প্রবাসীদের হয়রানিমুক্ত সেবা দেওয়ার নির্দেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
প্রবাসী বাংলাদেশিদের হয়রানিমুক্ত দ্রুত সেবা দিতে সরকারি কর্মকর্তাদের আরও যত্নশীল হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
আজ বৃহস্পতিবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের শেষ দিনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা খুব ভাগ্যবান যে ২০২১ সাল আমাদের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। আমাদের প্রায় এক কোটির বেশি প্রবাসী রয়েছে। তাদের কিছু অভিযোগ আছে যে, তারা সঠিক সময়ে পাসপোর্ট পান না, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স হয় না, দেশে এলে হয়রানির শিকার হয়। অনেক সময় তাদের ভূমি বেদখল হয়ে যায়। সময় মতো তারা ম্যারিজ সার্টিফিকেট, বার্থ সার্টিফিকেট পায় না। বিদেশে মারা গেলে ডেড বডি আনতে তথ্য পাওয়া যায় না, এ ধরনের একাধিক অভিযোগ তাদের আছে। এসব বিষয়গুলো ডিসিদের অবহিত করা হয়েছে।
ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা কোনো পাসপোর্ট বা এনআইডি দেই না। তবে এগুলো সংগ্রহ করে বিদেশে পাঠাই। সেগুলো যেতে অনেক সময় দেরি হয়। তাতে প্রবাসীরা অসন্তুষ্ট হয়। সেক্ষেত্রে আমরা আশা করবো জেলা প্রশাসকরা এক্ষেত্রে আরও যত্নশীল হবেন। যাতে এসব সেবা আরও ত্বরান্বিত ও হয়রানিমুক্তভাবে করা যায়, তার জন্য বলা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের সহকর্মী বা নির্বাচিত প্রতিনিধি বা সংসদ সদস্যরা বা স্থানীয় প্রশাসন এবং সরকারি অফিসে প্রবাসীদের সে ধরনের সম্মান দেন না। যেহেতু তারা নির্বাচিত ও জনগণের কাছে কমিটমেন্ট করেছেন; সে বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করা হয় না। সেসব বিষয়ে আরও যত্নশীল হতে হবে। তবে দুঃখজনক যে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ হয় না। সেজন্য আমরা বলেছি এদেশের বড় সম্পদ হচ্ছে প্রাণি ও মানুষ। এ মানুষগুলোকে কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটু মনোযোগ দিতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন যেগুলো নিজেরাই করতে পারেন অনেক সময় সেগুলো তারা ঢাকায় পাঠিয়ে দেন এবং নিজের দায়িত্বটা এড়িয়ে যান। এর ফলে সবাই ঢাকা কেন্দ্রিক হচ্ছে। এ বিষয়ে তারা সজাগ হবেন। যেগুলো তাদের করা উচিৎ সেগুলো তারা স্থানীয়ভাবে সমাধান করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সম্প্রতি দুর্গাপূজায় একটা প্রতিমা ভেঙে ফেললো আর সারা পৃথিবীতে এটা ছড়িয়ে গেল। কারণ সারা পৃথিবী এখন ইন্টারনেট কানেক্টেড। প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে যা হয় তা প্রতিটি জায়গায় চলে যায়। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের শক্ত অবস্থান নিতে হবে। এ ধরনের অপ্রীতিকর আর কোনো ঘটনা যেন না ঘটে।
এসময় প্রবাসে বাংলাদেশিদের হয়রানিমুক্ত সেবা দেওয়ার নির্দেশ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এমনকি সংসদ সদস্য বলেছেন, স্থানীয় প্রশাসন কিংবা অন্য সরকারি অফিস অনেক সময় সেই ধরনের সম্মান দেয় না কিংবা তাঁরা যেহেতু নির্বাচিত হয়েছেন, কিছু অঙ্গীকার করেছেন, সেগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করা হয় এটি খুবই দুঃখজনক, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ হয় না। এ বিষয়ে যেন ডিসিরা আরও সংবেদনশীল হন।