এরদোয়ানকে নিয়ে অবমাননাকর কথা বলায় নারী সাংবাদিক কারাগারে
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানকে নিয়ে অবমাননাকর কথা বলায় এক নারী সাংবাদিককে কারাগারে পাঠিয়েছেন দেশটির আদালত। গতকাল শনিবার সেদেফ কাবাস নামের ওই সাংবাদিককে আটক করা হয়। এবং আদালতে তোলা হলে তাঁকে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেওয়া হয়। সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
তুর্কি প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ করে একটি প্রবাদবাক্য ব্যবহার করেন ওই নারী সাংবাদিক। বিরোধীদলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ‘টেলে-১’ চ্যানেলে সরাসরি অনুষ্ঠানে সেদেফ কাবাস এরদোয়ানকে উদ্দেশ করে বক্তব্য দেন। পরে প্রেসিডেন্টকে অবমাননা করার অভিযোগে তাঁকে আটক করা হয়। তবে সেদেফ কাবাস এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অভিযোগ প্রমাণ হলে এক থেকে চার বছরের কারাদণ্ড হতে পারে সাংবাদিক সেদেফ কাবাসের।
টেলিভিশনে বলা কথা টুইটেও পোস্ট করেন সেদেফ কাবাস। তিনি টুইটে লেখেন, ‘একটি বিখ্যাত প্রবাদ রয়েছে—রাজমুকুটধারীরা প্রজ্ঞাবান হন। কিন্তু আমরা দেখছি, এটা সত্য নয়। আসলে, ষাঁড় রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করলেই রাজা হয়ে যায় না, রাজপ্রাসাদটিই বরং খামারে পরিণত হয়।’
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রধান মুখপাত্র ফাহরেত্তিন আলতুন সেদেফ কাবাসের মন্তব্যকে ‘অবিবেচনাপ্রসূত’ বলে আখ্যায়িত করেন। টুইটারে আলতুন বলেন, ‘একজন তথাকথিত সাংবাদিক নির্লজ্জভাবে একটি টেলিভিশনে আমাদের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে যা-তা বলে যাচ্ছেন। এতে ঘৃণা ছড়ানো ছাড়া আর কোনো উদ্দেশ্য নেই।’
অন্যদিকে, আদালতে দেওয়া বক্তব্যে সাংবাদিক সেদেফ কাবাস প্রেসিডেন্টকে হেয় করতে চাননি বলে দাবি করেছেন।
টেলে-১ চ্যানেলের সম্পাদক মেরদান ইয়ানারদাগ সেদেফ কাবাসের আটকের ঘটনার সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘একটি প্রবাদবাক্য উচ্চারণ করায় রাত ২টার সময় তাঁকে আটক করাটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি গোটা সমাজ, সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর ন্যক্কারজনক চেষ্টা।’
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ১১ বছর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট থাকাকালে এ পর্যন্ত প্রেসিডেন্টকে অবমাননার দায়ে কয়েক হাজার মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, শুধু ২০২০ সালেই তুরস্কে প্রেসিডেন্টকে অবমাননার অভিযোগে ৩১ হাজারের বেশি অভিযোগের তদন্ত হয়েছে।