দুর্নীতির অভিযোগে গ্রুপ থিয়েটারের সেক্রেটারি জেনারেল ও অর্থ সম্পাদক বরখাস্ত
সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজীদ ও অর্থ সম্পাদক রফিক উল্লাহ সেলিমকে আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও সাংগঠনিক স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন।
একইসঙ্গে কামাল বায়েজীদ আর কখনোই ফোডারেশনে নির্বাচন করতে পারবেন না বলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে অর্থ সম্পাদক রফিক উল্লাহ সেলিমের নাট্য সংগঠন ঢাকা নান্দনিকের সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের প্রচার সম্পাদক মাসুদ আলম বাবুর পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শনিবার (২২ জানুয়ারি) বিষয়টি জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত বছরের মার্চ থেকে কেন্দ্রীয় পরিষদ কর্তৃক গঠিত উপ-কমিটি ওই দুই সম্পাদকের কাছে সব আয়-ব্যয়ের হিসাব চেয়ে আসছে। কিন্তু তারা নানান অজুহাতে হিসাব দিতে গড়িমসি করে। এমনকি চূড়ান্তভাবে অর্থের হিসাব দিতেও ব্যর্থ হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় ফেডারেশন।
ফেডারেশনের প্রচার সম্পাদক মাসুদ আলম বাবু জানান, শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার রুমে শনিবার (২২ জানুয়ারি) ফেডারেশনের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে সভায় ৪১ জন জাতীয় পরিষদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তারা সম্মিলিতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেন।
কামাল বায়েজীদের বিরুদ্ধে গত তিন বছরে ব্যয় হওয়া এক কোটি ২৪ লাখ ৫১ হাজার ৩৭৩ টাকার হিসাব দিতে না পারা ও সংগঠনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে কেন্দ্রীয় পরিষদকে না জানিয়ে চেকের মাধ্যমে নিজের অ্যাকাউন্টে ফেডারেশনের টাকা ট্রান্সফার করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত তিন বছর ধরে সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালনকালে একক সিদ্ধান্তে ফেডারেশনকে পরিচালনা করেছেন। সংগঠনের গঠনতন্ত্রের শব্দ, ধারা-উপধারা নিজের মতো পরিবর্তন করেছেন। কেন্দ্রীয় পরিষদ ও নির্বাহী পরিষদের গৃহীত সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন না করে তার নিজের মতো করে ফেডারেশনকে পরিচালিত করেছেন।
অপরদিকে আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের দায়ে সম্পাদক (অর্থ) রফিক উল্লাহ সেলিমকে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে যাবতীয় টাকার হিসাব বুঝিয়ে দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে পরিষদ।
আনীত অভিযোগ প্রসঙ্গে ঢাকা থিয়েটারের সদস্য কামাল বায়েজীদ বলেন, ‘তিন বছর আগে যখন ফেডারেশনের দায়িত্ব নিই, তখন ১০ লাখ টাকা ঋণ ছিল। এ সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠান করার জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে ৭ লাখ টাকা খরচ করেছি। এ টাকা আমি ফেডারেশন থেকে আমার অ্যাকাউন্টে নিয়েছি। আমার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও আছে।’
তিনি পরিষদের সভায় উপস্থিত ছিলেন না জানিয়ে আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা আমাকে আগে জানানো হয়নি।’
উল্লেখ্য, আগামী মে মাসে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হবে। সে পর্যন্ত সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল চন্দন রেজা ও অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করবেন আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. চঞ্চল সৈকত।