বিধবাকে বেঁধে জমি দখলের অভিযোগ, পুলিশ বলছে সাজানো
পাবনার আটঘরিয়ায় রাশিদা খাতুন নামের এক বিধবাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে তার জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। পুলিশ বলছে ঘটনাটি সাজানো। গত শুক্রবার উপজেলার চাঁদভা ইউনিয়নের বাঐখোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে জানা গেছে, ওই দিন দুপুরের দিকে চাঁদভা ইউনিয়নের বাঐখোলা গ্রামে একই এলাকার রহিম উদ্দিনের ছেলে রমিজ উদ্দিন গং লাঠিসোটা নিয়ে বিধবা রাশিদাকে বেদম মারপিট করে শিকল দিয়ে হাত বেঁধে তার জমিতে টিনের ঘর তুলে জমি দখল করে নেয়। এ সময় স্থানীয়রা মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দিলে ভিডিওটি ভাইরাল হয়।
বিধবা রাশিদা খাতুনের অভিযোগ, শুক্রবার দুপুরে রমিজ উদ্দিন গং প্রায় অর্ধশতাধিক লোকজন নিয়ে এসে তাকে মারপিট করে শিকল দিয়ে বেঁধে ২০ শতাংশ আবাদি জমি দখল করে নেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আটঘরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
রাশিদার ছেলে মিনারুল ইসলামের অভিযোগ, বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা না নিলে ৯৯৯ ফোন দিলে আটঘরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম ঘটনাস্থলে গিয়েও রমিজ উদ্দিনের পক্ষে অবস্থান নেন।
স্থানীয় বেশ কয়েকজন প্রতিবেশী অভিযোগ করে বলেন, রমিজ উদ্দিন ঘটনার দিন বহিরাগত লোকজন নিয়ে এসে অতর্কিতভাবে এই বিধবার জমি দখল করেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান তারা।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, থানার এসআই আবুল কালাম আসামিদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে তাদের পক্ষ নেওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে আটঘরিয়া থানার এসআই আবুল কালাম বলেন, জমি দখলের ঘটনার সত্য। তবে শিকল দিয়ে বাঁধার যে ঘটনা সেটি সাজানো নাটক।
চাঁদভা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম কামাল বলেন, এক নারীকে শিকল দিয়ে বেঁধে জমি দখল করে নেওয়া হয়েছে—এমন একটি ভিডিও ফেসবুকে তার নজরে এসেছে। আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগও এসেছে।
এ বিষয়ে আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, ঘটনার সময় এসআই আবুল কালামকে পাঠানো হয়েছিল। শিকল দিয়ে বাঁধার বিষয়টি সাজানো।
এ বিষয়ে আটঘরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
তবে এলাকাবাসী ঘটনাটির তদন্ত পূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।