মানিকগঞ্জে করোনার টিকা সনদ যাচাইয়ে মাঠে পুলিশ
সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালিত হচ্ছে কি না, তা দেখতে মাঠে নেমেছে মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ। ক্রেতা ও বিক্রেতার করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়া আছে কি না, তা মাঠে নেমে যাচাই করছেন মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান।
আজ রোববার দুপুরে মানিকগঞ্জ শহরের দুধবাজার, গুড়পট্টি, পানপট্টি, ফলপট্টি ও মোদি-মনিহারি দোকানে করোনা ভাইরাসের টিকা সনদ যাচাইয়ে মাঠে নামেন পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি দল।
টিকা দেওয়া না থাকলে পুলিশের উদ্যোগে ওই ব্যক্তিকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পুলিশের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রতিটি দোকানে পুলিশ সুপার সরাসরি উপস্থিত হয়ে বিক্রেতা ও ক্রেতাকে প্রশ্ন করেন টিকা নেওয়া আছে কি না? অনেকেই সঙ্গে সনদ দেখাতে না পারলেও মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ দেখান। সেই সঙ্গে অনেকেই টিকার সনদ বা মোবাইল ফোনে মেসেস দেখাতে পারেনি। যারা টিকা নেননি তাদের পুলিশের সহযোগিতায় তাৎক্ষণিক টিকা দেওয়ার জন্য টিকাকেন্দ্রে পাঠিয়ে দেন।
পুলিশের এই অভিযান চলাকালে দেখা গেছে যাদের টিকা দেওয়া নেই তারা দ্রুত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে সটকে পড়ছে। শুধু বিক্রেতা নয় পুলিশের জেড়ার মুখে পড়ে নানা বয়সী ক্রেতারাও। ক্রেতারা অনেকই টিকার সনদ সঙ্গে নিয়ে মার্কেটে ঢুকেছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার ১১ দফা স্বাস্থ্যবিধি ঘোষণা করেছে। মানুষজনকে সচেতন করতে বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। এর পরও অনেকই স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ব্যবসা-বাণিজ্য করে যাচ্ছে। ক্রেতাদের ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে মানিকগঞ্জ পৌরমার্কেট, শহীদ সরণি রোড ও শহরের বাজার এলাকায় অভিযান চালানো হয়। সরকার বিনামূল্যে টিকা দিচ্ছে। কিন্তু অনেকই সেই টিকা নিচ্ছে না। এটি দেখার জন্য মুলত মাঠ পর্যায়ে এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এই অভিযানে মানুষজন বুঝতে পারছে টিকা না নিলে ব্যবসা পরিচালনা ও ক্রেতা হিসেবে মার্কেটে যাওয়া যাবে না। তিন দিনের এই অভিযানে ৭৮ জনকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এই অভিযান শুধু জেলা শহরেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। আগামীকাল সোমবার থেকে প্রতিটি উপজেলায় এই অভিযান পরিচালিত হবে। এই অভিযানের মুল উদ্দেশ্য মানুষজন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুক এবং যারা টিকা নেয়নি তাদের টিকার আওতায় নিয়ে আসা। সেই সঙ্গে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করা।
এ ব্যাপারের মানিকগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার মোয়াজ্জেম আলী খান জানান, পুলিশ সুপারের এই উদ্যোগ সত্যি প্রশংসার দাবিদার। টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে এখনও অনেক মানুষের অনীহা রয়েছে। পুলিশ সুপারের মতো বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন যদি মাঠে নামে তবে মানুষজন স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে আরও সচেতন হবে।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ জানান, সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মানা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। পুলিশ সুপার যেটি করছেন, তাতে মানুষজন আরও সচেতন হবে।