বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজ-মরিচের ঝাঁজ, অসহায় ক্রেতারা
বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজ-মরিচের ঝাঁজ। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মুরগির দামও। এ ছাড়া কিছু সবজির দাম বেড়েছে, কিছু রয়েছে স্থিতিশীল। ক্রেতাদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করতে দেখা গেছে বাজারে। স্বস্তিতে নেই বিক্রেতারাও।
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি ও খুচরা দোকান ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে মরিচের দাম কেজিতে অন্তত ৩০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে মরিচ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। আজ যা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে।
সপ্তাহের হিসাব কষলে পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল অন্তত ১৫ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হলেও গতকাল শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা কেজি দরে। তবে আজ শনিবার পেঁয়াজের দাম কমেছে ৫ টাকা কেজি দরে।
কেন এই দাম বাড়ছে, এ প্রশ্নে বিক্রেতাদের কাছ থেকে দু–ধরনের উত্তর পাওয়া গেছে। কেউ বলছেন, গেল সপ্তাহে বৃষ্টি হওয়াতে মরিচ পঁচা শুরু হয়েছে। ফলে দাম বেড়ে চলেছে। এ দাম আরও বাড়তে পারে বলে তাদের মত। তবে কেউ কেউ বলছেন, চাষি খেতেই পেঁয়াজ মজুদ করা শুরু করেছেন বলে দাম বেড়েছে।
কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কিছু সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ টাকা কেজি দরে বেড়েছে। আবার কিছু সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে, কমেছে এমন সবজি চোখে পড়েনি।
করলার দাম গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। তবে আজ দাম বেড়ে কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে সিম বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। যা আজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। সিমের বিচি ১২০ টাকা বিক্রি হলেও আজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি দরে।
গত সপ্তাহে বেগুন ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহের ২০ টাকার টমেটা আজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে। এদিকে মটরশুঁটি গত সপ্তাহে ৬০ টাকা বিক্রি হলেও আজ তা ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে গত সপ্তাহের ২০ টাকার মুলা আজও কেজি ২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ফুলকপি ও বাধাকপি দাম গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা পিস। আজও একই দরে বিক্রি হচ্ছে। লালশাকের আঁটি ১০-১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা। শাকের দামও একই রকম ছিল।
এদিকে, মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৫০-২৬০ টাকা। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৪৫০ টাকা দরে।
বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আসাদ উল্লাহ বলেন, ‘বাজারে আসতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু, খেতে তো হবে। সব জিনিসের দামই বেশি। আরও বেশি হবে মনে হচ্ছে। সামনে রমজান, আর কোনো কিছুর দামই কমবে না। আমার মতো মধ্যবিত্তের টিকে থাকাই মুশকিল।’
খুচরা সবজি বিক্রেতা মো. লিটন বলেন, ‘অধিকাংশ জিনিসের দাম বেশি। আমাদের কিছু করার নেই। আমরা যেভাবে কিনছি, সেভাবেই বিক্রি করছি। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মরিচের দাম। আরও বাড়বে মনে হচ্ছে।’
খুচরা পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৫০ টাকা কেজি দরে। গত বৃহস্পতিবার ৪৮ এবং বুধবার পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৪৭ টাকা কেজি দরে। তবে আজ পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা করে কমছে।’