শহীদ মিনারে ছাত্রলীগ নেতার মাথা ফাটালেন নেত্রী নিশি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মো. ইয়াসিনের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশি। আজ সোমবার একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে অপর এক ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ছাত্রলীগের নেত্রী ফাল্গুনী দাস তন্বীকে মারধর করেন নিশি। ওই ঘটনায় নিশির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
আজকের ঘটনা সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ তুলে বেনজির হোসেন নিশি তাঁর হাতে থাকা মুঠোফোন দিয়ে মো. ইয়াসিনকে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকেন। এতে করে ইয়াসিনের মাথা ফেটে যায় এবং রক্তক্ষরণ শুরু হয়। একপর্যায়ে ইয়াসিন জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাঁকে ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইয়াসিনের মাথায় চারটি সেলাই করেন। পরে চিকিৎসা শেষে তাঁকে বাসায় পৌঁছে দেন ছাত্রলীগ কর্মীরা।
এ ব্যাপারে মো. ইয়াসিন বলেন, ‘শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় অনেক নেতাকর্মীই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে হঠাৎ করে নিশি আপু আমাকে মোবাইল দিয়ে মাথায় আঘাত করতে থাকেন। আমার মাথা ফেটে রক্ত পড়ার পরও তিনি মাথায় আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। হাসপাতালে গিয়ে আমার জ্ঞান ফেরে। মাথায় চারটি সেলাই লেগেছে। চিকিৎসকের পরামর্শে এখন বাসায় বিশ্রামে আছি।’
আর কেউ আঘাত করেছে কিনা জানতে চাইলে ইয়াসিন বলেন, ‘আর কেউ নয়, নিশি আপুই আমাকে মেরেছে।’
মারধরের ঘটনা অস্বীকার করে সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশি বলেন, ‘ফুল দেওয়ার সময় অনেক ভিড় ছিল। সেখানে এমন ঘটনা ঘটতে পারে তবে সেটা আমার সঙ্গে ঘটেনি। কে বা কার সঙ্গে ঘটেছে এখন আমার নাম জড়িয়ে মিথ্যা প্রচার করছে।’
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ প্রাঙ্গণে রোকেয়া হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনী দাস তন্বীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ রয়েছে বেনজীর হোসেন নিশির বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে আদলতে মামলাও হয়েছে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে সেই মামলার। তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আদালত এই ছাত্রলীগ নেত্রীসহ তার পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেন।