সুনামগঞ্জে মানববন্ধনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, পুলিশের গুলি
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধনকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার গুলি ছুড়েছে পুলিশ। এতে ১৩ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে এবং এদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। ছয় জন পুলিশ সদস্যও এ ঘটনায় আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাহিরপুর উপজেলা সদরের পূর্ব বাজারে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে এতে ঘটনাস্থলের বাইরে পুলিশের গুলিতে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আহতদের স্বজনেরা।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আহতেরা হলেন- ডালিয়া নার্গিস সুমি (৫০), বাবলী চৌধুরী (৩৫), আনজু মিয়া (৩০) অনিক মিয়া (২৫), অংকন গণি (১২), নেজারুল ইসলাম (৩০), মাসুম মিয়া (২২), রুমেন মিয়া (৩০) রুনা বেগম (৪৫), তানসেন তালুকদার তুষার (৩০), রাসেল মিয়া (৩০), পারভিন আক্তার (৪৫) এমদাদুল মিয়া (৩৫)।
আহত ডালিয়া নার্গিস সুমি, বাবলী চৌধুরী, আনজু মিয়া, অনিক মিয়া ও অংকন গণিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত অন্যরা তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সংঘর্ষের ঘটনাস্থল থেকে কামরুল ইসলাম, বদরুজ্জামান, আসাদ মিয়া ও সৈয়দ গোলাম হোসেন নামের চার জনকে আটক করেছে পুলিশ। উপজেলা সদরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তাহিরপুর উপজেলার সাংবাদিক রাজন চন্দ ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হাফিজ উদ্দিনের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাজন চন্দের বাবা স্থানীয় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রমেন্দ্র নারায়ণ বৈশাখের উপর হাফিজ উদ্দিনের সমর্থকেরা হামলা করায় দুপক্ষের মধ্যে এমন উত্তেজনা দেখা দেয়।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রমেন্দ্র নারায়ণ বৈশাখের উপর হামলার ঘটনায় মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনের পর সাংবাদিক রোকন উদ্দিনের ভাতিজা ছাত্রলীগ নেতা তানসেন তালুকদার তুষারকে রাস্তায় পেয়ে মারধর করেন যুবলীগ নেতা হাফিজ উদ্দিনের ভাতিজা আবুল বাশার। এ নিয়ে উপজেলা সদরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। পুলিশ সংঘর্ষ থামাতে রাবার ছুঁড়লে ১৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মির্জা রিয়াদ বলেন, ‘ছয় জন পুলিশসহ আহত ১৯ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। ৯ জন গুলিবিদ্ধ ছিলেন। চার জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন, ‘দুপক্ষের সংঘর্ষ ঠেকাতে সাত রাউন্ড গুলি ছুড়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে কামরুল ইসলাম, বদরুজ্জামান, আসাদ মিয়া ও সৈয়দ গোলাম হোসেন নামের চার জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছে। উপজেলা সদরে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’