পিলখানা হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এ বছরেই, অ্যাটর্নি জেনারেলের আশাবাদ
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কিংবা বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্তদের আপিল শুনানি এ বছরের মধ্যে শুরু হয়ে যাবে বলে আশা করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। এ ছাড়া আপিলগুলোর চূড়ান্ত নিষ্পত্তিও চলতি বছরে হবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।
এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘এ মামলায় যাদের ফাঁসির আদেশ কিংবা বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে, সে বিষয়েও শক্ত অবস্থানে থাকবে রাষ্ট্রপক্ষ। যাঁদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়েছে, তাঁরা আপিল করেছেন। যাঁরা জাবজ্জীবন বা বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি পেয়েছেন, তাঁরাও আপিল করেছেন। সবগুলো আপিলের হয়তো একত্রে শুনানি হবে। সেক্ষেত্রে আশা করা যাচ্ছে, এ বছরই হয়তো শুনানি শুরু হবে। শুনানি হলে তো এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।’
পিলখানা বিদ্রোহের এ ঘটনায় নয় হাজার ১৯ জন জোয়ানকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি ও চাকরিচ্যুত করা হয়। তাঁদের মধ্যে আট হাজার ২৮৭ জন বিভিন্ন মেয়াদে লঘুদণ্ড পেয়ে বিজিবিতে বহাল রয়েছেন। আর হত্যা মামলায় ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১৬১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ২৬২ জনের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছেন বিশেষ জজ আদালত।
পিলখানা ট্র্যাজেডির ভয়াবহ নৃশংসতার পর হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে আলাদা দুটি মামলার বিচার শুরু হয় একসঙ্গে। লোমহর্ষক এ ঘটনার বৈচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় হয়েছে ২০২০-এর জানুয়ারিতে, আর ডিসেম্বরের শেষে সার্টিফায়েড কপি পাওয়া গেছে। এখন অপেক্ষা, আপিল বিভাগে চূড়ান্ত আইনি লড়াইয়ের।
সমসাময়িক দুটি মামলার একটিতে হাইকোর্টে আসামিরা অব্যাহতি পেলেও বিস্ফোরক মামলা চলমান থাকায় তাঁরা কারাভোগ করছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৮২ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এবং ১০২ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পক্ষে এরই মধ্যে সুপ্রিমকোর্টে আপিল ফাইল করেছি। আরও তিনটি ফাইল আপিল করার জন্য প্রক্রিয়াধীন। এই আপিলগুলো মহামান্য সুপ্রিমকোর্টে এখনও পেন্ডিং। রাষ্ট্রপক্ষ খালাসপ্রাপ্তদের বিপক্ষে ২৯টি আপিল ফাইল করেছে।’
আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘দুভাগ্যজনকভাবে বিস্ফোরক আইনের মামলাটি এখনও সাক্ষীর পর্যায়ে রয়েছে। আমরা জানি না এ মামলাটি আরও কত বছর লাগবে বা কবে নাগাদ এটা শেষ হবে। আমরা বারবার দরখাস্ত দিয়ে আদালতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি, রাষ্ট্রপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য।’
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিদ্রোহের নামে হত্যা করা হয় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাকে। নৃশংস এ ঘটনায় করা দুই মামলায় আসামি আছেন ৮৫০ জন। এ ছাড়া বাহিনীর নিজস্ব আইনে ৫৭টি মামলায় প্রায় ছয় হাজার জনকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।