রাজধানীর প্রত্যেক বাড়িতে সেপটিক ট্যাংক থাকতে হবে : স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীর পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি বাসা-বাড়ি এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব সেপটিক ট্যাংক থাকতে হবে। এ ছাড়া সুয়ারেজ লাইন কোনোভাবে সরাসরি লেক অথবা খালে দেওয়া যাবে না।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নগর ভবনে আজ রোববার আয়োজিত ‘নিরাপদ পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা : আমাদের করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
এ সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ঢাকা শহরে আইন ও বিধিবিধান লঙ্ঘন করে অপরিকল্পিতভাবে অনেক অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকা শহরের ৯৯ শতাংশ অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে নিয়ম অমান্য করে। রাজধানীর বেশির ভাগ বাসা-বাড়িতে সেপটিক ট্যাংক নেই। আর, এ সেপটিক ট্যাংক না থাকায় সুয়ারেজ লাইন খাল ও লেকে সরাসরি দিয়ে দেওয়া হয়। এতে করে খাল ও লেকের পানি দূষিত হওয়ায় মাছসহ অন্যান্য প্রাণী বাঁচতে পারে না।’
পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সেপটিক ট্যাংক না রেখে কোনো বাসা-বাড়ি নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই। নকশা অনুমোদন দেওয়ার আগে এসব বিষয়ে আরও সতর্ক থাকার জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউককে নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ার কারণে ভোগ বেড়েছে। পাশাপাশি বৃদ্ধি পেয়েছে ময়লা-আবর্জনা। আগে একটি ব্যাগে অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেওয়া হতো। এখন প্রতিটি উপকরণের সঙ্গে একটি ব্যাগ দেওয়া হয়, যার ফলে বাসা-বাড়িতে ময়লা বেশি হয়। স্বাভাবিকভাবেই এ ময়লা-আবর্জনা একটি ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনা চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। আর এ চ্যালেঞ্জ শুধু আমাদের দেশে নয়, পৃথিবীর অন্য দেশেও রয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করছে সরকার।’ খুব শিগগিরই ময়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, রাজধানী ঢাকাকে একটি আধুনিক, দৃষ্টিনন্দন ও বসবাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়তে উভয় সিটি করপোরেশন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে অনেক দখল হওয়া খাল উদ্ধার করা হয়েছে। খালগুলো সংস্কার ও পুনঃখনন করে নৌ-চলাচলের উপযোগী করার কাজ চলছে। এসব কাজ শেষ হলে শহরের অনেক পরিবর্তন আসবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘সবাইকে আইন মেনে চলতে হবে। আইনই মানুষকে সভ্য করেছে। আইন সবার জন্য সমান। মন্ত্রী-এমপি, মেয়র ও ক্ষমতাবানদের জন্য আলাদা কোনো আইন নেই। কাউকে ছাড় দিবেন আর কাউকে ধরবেন, এটা হবে না। রাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যদি অর্পিত দায়িত্ব সাহসিকতার সঙ্গে পালন করেন, তাহলে অবশ্যই পরিবর্তন আসবে।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনিসেফের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ সেলডন ইয়েট।
এর আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সংক্রান্ত বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।