স্ত্রীর পাশাপাশি স্বামীরও কি পরীক্ষা করা দরকার?
অনেক নারীর একাধিকবার গর্ভপাত হয়। এতে স্বামী-স্ত্রী উভয়ই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। চিন্তিত পরিবারের সবাই। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে বারবার গর্ভপাত ও এর প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে বারবার গর্ভপাত ও এর প্রতিকার নিয়ে কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) ফিটোম্যাটারনাল মেডিসিন বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. ফিরোজা বেগম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।
আমরা অনেকেই বলে থাকি, শুধু স্ত্রীরই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রয়োজন হয়। তাঁর স্বামীরও কি পরীক্ষা করার প্রয়োজন আছে? কারণ, এ বিষয়ে নানা বিভ্রান্তি রয়েছে অনেকের মধ্যে। সঞ্চালকের এ কথার জবাবে অধ্যাপক ডা. ফিরোজা বেগম বলেন, এটা তো অবশ্যই করা উচিত। আগে ছেলেদের সমস্যা নিয়ে বেশি আলোচনা হতো না। আমাদের ডাক্তারের মধ্যেও এ জ্ঞানটা কম ছিল। এখন আমরা জানি, ছেলেরা যে পরিবেশে বড় হচ্ছে... মহিলা ধরেন চাকরি করে, তার বাসার পরিবেশ একরকম এবং স্বামী যে বাইরে কাজ করে, সে কিন্তু অন্য পরিবেশে এক্সপোজড হচ্ছে। যেমন আমি যদি বলি, গাড়ির কালো ধোঁয়া। সেটা সে প্রতিদিন নিচ্ছে। সে যদি ইলেকট্রিক সার্কিট নিয়ে কাজ করে, কম্পিউটার নিয়ে কাজ করে—এগুলো কিন্তু তার স্পার্মের ক্ষতি করে। স্পার্মের মধ্যে জেনেটিক ডিফেক্ট এই এক্সপোজারের কারণে হতে পারে। সেটাও কিন্তু গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।
যে মহিলাদের বারবার গর্ভপাত হচ্ছে, তার পরবর্তী সময়ে যখন তিনি আবার গর্ভধারণ করছেন, পরবর্তীতে একজন সুস্থ শিশু হওয়ার জন্য তাঁকে কী কী আনুষঙ্গিক ব্যাপার মেইনটেইন করতে হয়। সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. ফিরোজা বেগম বলেন, এটার মধ্যে অনেক জিনিস আছে। এক নম্বর হলো, তিনি ফিজিক্যালি ফিট কি না। যেটা হলো, আলট্রাসাউন্ড করে আমি তাঁর অরগ্যান দেখলাম, সেটা একটা ব্যাপার এবং তাঁর বিভিন্ন টেস্ট করলাম, সেটা ভিন্ন জিনিস। আমি যেটার ওপর জোর দিতে চাচ্ছি, সেটা হলো ফিজিক্যাল ফিটনেস। আমাদের দেশে দেখা যায় মেয়েরা অনেক বেশি মোটা। তখন আমরা ওজন কমাতে বলি। দুই নম্বর হচ্ছে, তাঁর সাইকোলজিক্যাল বা মেন্টাল প্রিপারেশন লাগবে। যেমন একটা মেয়েকে যদি তাঁর পরিবার থেকে বারবার মেন্টাল রিপ্রেশন করা হয়, তাহলে ওটাও কিন্তু নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট নিয়ে আসে ওই বাচ্চার ওপর। আমরা তো সেটা চাই না। বাচ্চা হবে সুস্থ-সবল। আমি বলব, তাঁর মেন্টাল প্রিপারেশনের দরকার আছে, ফিজিক্যাল প্রিপারেশনের দরকার আছে এবং আমরা একটি ওষুধ বলি খেতে, যেটা ফলিক অ্যাসিড, মাল্টিভিটামিন খেতে বলি। বলি যে প্রেগন্যান্সি প্ল্যান করার কমপক্ষে তিন মাস আগে উনি শুরু করবেন। যদি প্রেগন্যান্সি আসে, তার পরেও তিন মাস উনি ওষুধ কন্টিনিউ করবেন।
বারবার গর্ভপাত কেন হয়, কী করণীয়, এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন।