ঐতিহ্যবাহী শব্দিগঞ্জ ঈদগাহ : একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন ৬০ হাজার মুসল্লি
নীলফামারীতে সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় জেলার ডোমার উপজেলার ‘শব্দিগঞ্জ ঈদগাহ ময়দান’-এ। একসঙ্গে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ নামাজ আদায় করে থাকেন এ ঈদগাহ ময়দানে।
ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের শব্দিগঞ্জ এলাকার এ ময়দানে ভোগডাবুড়ি এবং পার্শ্ববর্তী পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার বড়শশি ইউনিয়নের মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করেন।
ময়দান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৭১২ সালে এ ময়দানে ঈদের নামাজ শুরু হয়। এখন ৫১ বিঘা জমির ওপর ময়দানটির সম্প্রসারণ ঘটেছে। ময়দানের ৭৬টি কাতারে নামাজে অংশগ্রহণ করেন মুসল্লিরা। প্রতি কাতারে অংশ নিতে পারেন প্রায় ৫০০ জন।
শব্দিগঞ্জ হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মো. মাজেদুল ইসলাম জানান, এখানে নামাজ আদায় করতে দূরদূরান্ত থেকে মুসল্লিরা আসেন। বিভিন্ন জেলা থেকেও আসেন। এর চেয়ে বড় ঈদ জামাত নীলফামারীতে আর হয় না।
মাদ্রাসার শিক্ষক মো. মাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন মাওলানা মো. তছলিম উদ্দিন।’
স্থানীয় বাসিন্দা শাহরিয়ার ইসলাম রিয়াদ বলেন, ‘ঈদগাহ ময়দানে দুবছর নামাজ আদায় করতে পারিনি। ময়দানে নামাজ আদায় করার মজাই আলাদা। করোনা কাটিয়ে এবার নামাজ হচ্ছে, এজন্য এ এলাকার মানুষ খুবই খুশি।’
এদিকে, দুবছর পর ময়দানে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। ময়দান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি সাজসজ্জাও করা হয়েছে।
শব্দিগঞ্জ ঈদগাহ ময়দান পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে দুবছর এ ময়দানে নামাজ হয়নি। ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু, ওজু করার ব্যবস্থায় সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ওজুখানা এখানে প্রয়োজন। ময়দান-সংলগ্ন একটি পুকুর রয়েছে, মুসল্লিরা সেখানে গিয়ে ওজু করে আসেন। ঈদের দিন এত মানুষের উপস্থিতি এখানকার পরিবেশ বদলে দেয়। আমরা চাই, কেউ যদি সহায়তা করতে চান, তাহলে ময়দানের উন্নয়ন করা সম্ভব।’
চিলাহাটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুর রহিম জানান, আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদ্যাপনে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং ঈদগাহ ময়দানে নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। বিশেষ করে শব্দিগঞ্জ ময়দানটি অনেক বড় হওয়ায় সেখানে অতিরিক্ত নজরদারি রাখা হয়েছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকতা।