মানুষ নিরিবিলি কেঁদেও শান্তি পাবে না : রিজভী
‘আওয়ামী সরকারের জন্য প্রলয়-দিন ঘনিয়ে এসেছে’—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক চরম দুর্দশাগ্রস্ত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মানুষ নিরিবিলি কেঁদেও শান্তি পাবে না।’
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশে জনগণের অবস্থা করুণ ও মর্মান্তিক। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আলোর গতিতে দৌড়াচ্ছে। গম আমদানি করা যাচ্ছে না। কারণ, রপ্তানিকারক দেশ গম রপ্তানি বন্ধ করেছে। চালের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি এবং সয়াবিন তেল উধাও হয়ে যাওয়ার পর কয়েক দিনের মধ্যে আটা ক্রয় করা অসম্ভব হবে সাধারণ মানুষের জন্য। সিন্ডিকেটের দৌরাত্মে খাদ্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখী গতি থামছেই না।’
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, ‘খাদ্যপণ্য নিয়ে সব ধরনের গভীর সংকটে বাংলাদেশ। উজানের পানি ও বাঁধ ভেঙে বাংলাদেশের এক বিস্তৃত অঞ্চলের ধান তলিয়ে গেছে। কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সারা জাতি আকুল উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছে। বাংলাদেশে এক দুর্বিষহ সংকট প্রচণ্ড গতিতে ধেয়ে আসছে। বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে দেউলিয়াত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কার চেয়েও বাংলাদেশের অবস্থা আরও সংকটাপন্ন। অর্থনৈতিক চরম দুর্দশাগ্রস্ত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মানুষ নিরিবিলি কেঁদেও শান্তি পাবে না।’
রিজভী বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নীলনকশা হিসেবে নতুন নতুন কালাকানুন তৈরিতে ব্যস্ত এ নিশিরাতের সরকার। জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ও অন্য মাধ্যমের নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন আইন প্রণয়ন করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ডিজিটাল মাধ্যম ও ওভার দ্য টপ (ওটিটি) মাধ্যমের জন্য নতুন একটি প্রবিধান বা নীতিমালা তৈরি করছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ২০১৮ সালেও জাতীয় নির্বাচনের মাত্র তিন মাস আগে তড়িঘড়ি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করা হয়। এবারও আরেকটি নতুন কালাকানুন তৈরির যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা হবে আরও ভয়ংকর। বিরোধীতা দূরে থাক, জাতীয় জীবনকে নেতিয়ে পড়ার দিকে ঠেলে দেওয়ার কৌশল হিসেবেই এ কালাকানুনগুলো তৈরি করা হচ্ছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এখন অত্যাচারী আততায়ীর আঘাতে ছিন্নভিন্ন। নিজের আত্মসম্মানে জাগ্রত হয়ে জাতি সবসময় চিরসজাগ থেকেছে, আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধেও এ দেশের মানুষ নিজেদের জীবন-জীবিকা রক্ষার প্রয়োজনে রাজপথে ধেয়ে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আওয়ামী সরকারের জন্য প্রলয়-দিন ঘনিয়ে এসেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবীব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বিএনপি নেতা আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।