পি কে হালদারের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা
সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ভারতে গ্রেপ্তার এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের নামে আরও একটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নতুন এ মামলায় ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। এতে পি কে হালদারসহ ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ ১২ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত।
মামলার অপর আসামিরা হলেন—এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুণ্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার, এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার, দিয়া শিপিং লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিব প্রসাদ ব্যানার্জী ও পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জি।
এর আগে কমিশন মামলাটির অনুমোদন দেয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট থেকে ৪৪ কোটি টাকা তুলে আত্মসাৎ ও পাচার করে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হন।
হালদারকে দেশে আনতে কমিটি
পি কে হালদারকে ভারত থেকে দেশে আনতে বুধবার কমিটি করে দুদক। ওই কমিটিতে রয়েছেন দুদকের উপপরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও গুলশান আনোয়ার। এ কমিটি ভারতে গ্রেপ্তার পি কে হালদারকে দ্রুত দেশে ফেরানোর আইনগত বাধা দূরীকরণে কাজ করবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আপাতত দুই সদস্যের কমিটি করা হলেও প্রয়োজনে সদস্য পাঁচ জন পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র।
কী বলছেন মন্ত্রীরা
পি কে হালদারকে দ্রুত দেশে ফেরত আনতে চায় সরকার। মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘মূল অপরাধ যেহেতু বাংলাদেশে সংঘটিত হয়েছে, সেহেতু ভারতে বিচারের আগেই পি কে হালদারকে ফেরত চাইবে ঢাকা।’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আমাদের প্রথম পদক্ষেপ হবে তাঁকে ফিরিয়ে আনা। যে মুহূর্তে তাঁকে ফিরিয়ে আনা হবে, তখন থেকে তাঁর বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। পি কে হালদারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে, সে অভিযোগের বিচার করে তাঁর পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা রয়েছে।’
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনা খুব কঠিন। তবে, মানি লন্ডারিং আইন যেহেতু বিশ্বের সব জায়গায় কঠোরভাবে মানা হচ্ছে, তাই টাকা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।’
একই দিনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার দোরাইস্বামী। তিনি জানান, দুদকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হন পি কে হালদার।
গ্রেপ্তার ও রিমান্ড
গত শনিবার পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় পি কে হালদারসহ ছয় জনকে। এরপরই তিন দিনের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হয় তাঁদের। গ্রেপ্তারের সময় পি কে হালদারের কাছ থেকে ভারতের নাগরিকত্ব, আধার কার্ডসহ বেশ কিছু নথি জব্দ করে অর্থসংক্রান্ত গোয়েন্দা সংস্থা ইডি।
মঙ্গলবার দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টের সিবিআই আদালতে পি কে হালদারসহ ছয় জনকে হাজির করা হয়। সেখানে গ্রেপ্তার পাঁচ জনের ১০ দিন করে রিমান্ডে চাইলে আদালত কিছুটা সময় নিয়ে হেফাজতের নির্দেশ দেয়।