উত্তর কোরিয়ায় করোনার ঢেউ : টানা পঞ্চম দিন দুই লক্ষাধিক মানুষ জ্বরে আক্রান্ত
উত্তর কোরিয়ায় টানা পঞ্চম দিনের মতো নতুন করে দুই লক্ষাধিক রোগী জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। কোভিড সংক্রমণের তথ্য সরকারিভাবে জানানোর পর থেকে এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
আড়াই কোটি জনগণের দেশ উত্তর কোরিয়ায় গত সপ্তাহে ঘোষিত কোভিড-১৯ পরিস্থিতি চলমান রয়েছে। সে দেশে কোভিড টিকার সংকট, চিকিৎসা উপকরণের অপর্যাপ্ততা এবং সম্ভাব্য খাদ্য ঘাটতি দেশটির পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেও দেশটি নিজেদের সীমান্ত বন্ধ রাখাসহ বৈদেশিক সাহায্য প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে—গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট দুই লাখ ১৯ হাজার ৩০ জন নতুন করে জ্বরে আক্রান্ত শনাক্ত হয়। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২৪ লাখ ৬০ হাজার ৬৪০ জনে। অপরদিকে, মৃতের সংখ্যা একজন বেড়ে ৬৬ জনে দাঁড়িয়েছে। যদিও প্রকৃতপক্ষে কত জনে কোভিড পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ এসেছে, তা জানায়নি কেসিএনএ।
অপর এক প্রতিবেদনে কেসিএনএ জানায়, কোভিড ও জ্বরের সংক্রমণের ঘোষণার পর থেকে নয় দিন পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জন উন আজ শনিবার সকালে ক্ষমতাসীন ওয়ার্কাস পার্টির ক্ষমতাধর কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বৈঠকে কিম জং উন ভাইরাস প্রতিরোধ কর্মকাণ্ডের ‘ইতিবাচক অগ্রগতির’ প্রশংসা করেন। তবে, একই সঙ্গে তিনি ‘মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ের সুযোগ কাজে লাগাতে’ ধারাবাহিকভাবে নীতিগত সমন্বয় ও জোরদার করারও নির্দেশ দেন। যদিও কিম কোথায় অগ্রগতি দেখেছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি কেসিএনএ। তবে, রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম হিসেবে কেসিএনএ কোভিড মোকাবিলায় সে দেশের ‘ভালো ফলাফলের’ তথ্য প্রকাশ করছে এবং দেশটির প্রধান শিল্প খাত ও নির্মাণ প্রকল্পগুলোতে টেকসই কৃষিজ ও অন্যান্য পণ্য উৎপাদনের খবর প্রকাশ করছে।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, জাতীয় পর্যায়ে টিকা নিয়ে প্রচার না থাকার কারণে কোভিড পরীক্ষা নিয়ে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমের প্রকাশিত তথ্যে ঘাটতি রয়েছে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। তাই, এ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সে দেশো করোনার প্রকৃত অবস্থা নির্ণয় করা সহজ নয় বলেই তাঁরা মনে করছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা উত্তর কোরিয়ার জনগণের ‘বিধ্বংসী’ পরিণতির হতে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে। অপর দিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে—এমন অনিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি করোনার মারাত্মক নতুন নতুন ভ্যারিয়্যান্টের বিস্তার ঘটাতে পারে।