রক্তক্ষয়ী এ লড়াই শেষ হতে পারে কেবল কূটনীতির মাধ্যমে : জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলছেন—রাশিয়ার সঙ্গে তাঁর দেশের চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটতে পারে কেবল কুটনৈতিক নিষ্পত্তির মাধ্যমে। খবর বিবিসি ও ভয়েস অব আমেরিকার।
ইউক্রেনের টেলিভিশনকে শুক্রবার রাতে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে জেলেনস্কি বলেন, ‘জয়লাভ করাটা কঠিন হবে, রক্তক্ষয়ী লড়াই হবে, কিন্তু এর পরিসমাপ্তি ঘটবে অবশ্যই কেবল কুটনীতির মাধ্যমে। আমি এ ব্যাপারে নিশ্চিত। এমন অনেক কিছু রয়েছে, যার সমাধান আলোচনার টেবিলে না বসা পর্যন্ত হবে না।’
ইউক্রেনের নেতা আরও বলেন, তাঁর দেশ সেসব যোদ্ধাকে পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছে, যারা দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলের আজভস্টাল ইস্পাত কারখানায় কয়েক সপ্তাহ ধরে লড়াই করার পর রুশ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘সবকিছুই নির্ভর করবে জাতিসংঘ, রেডক্রস ও রুশ ফেডারেশন যে দায়িত্ব নিয়েছে, তার ওপর। তারা দায়িত্ব নিয়েছে যে যোদ্ধারা নিরাপদে থাকবে, যারা কি না যেকোনো ধরনের বন্দি বিনিময় প্রক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।’ তিনি বলেন, ইউক্রেনের গোয়েন্দা বিভাগ ‘সংলাপ ও বিনিময়ের জন্য’ প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রায় তিন মাস আগে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর পুরোদমে হামলা চালানো শুরু করের
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়—দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেরগেই শোইগু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জানিয়েছেন যে, আজভস্টালের ইস্পাত কারখানা ও মারিউপোলকে ‘সম্পুর্ণ মুক্ত’ করা হয়েছে। তবে, মারিউপোল সম্পূর্ণভাবে রুশ নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে কি না, সে বিষয়ে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে তাত্ক্ষণিকভাবে নিশ্চিত কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
অবরুদ্ধ মারিউপোলে যুদ্ধের সময়ে সবচেয়ে বেশি রক্তপাত ঘটেছে। রুশ বাহিনী প্রায় তিন মাস ধরে সেখানে বোমাবর্ষণ করেছে। মারিউপোলের বেশির ভাগটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেখানে ২০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। শহরটির ইস্পাত কারখানায় লুকিয়ে থাকা ইউক্রেনের যোদ্ধারা কয়েক সপ্তাহ ধরে রুশ বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করেছে। এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে অবশ্য ইউক্রেনের কর্মকর্তারা যোদ্ধাদের জীবন রক্ষার জন্য আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
আজভস্টাল ইস্পাত কারখানা থেকে ঠিক কত জন নিরাপদে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন, সে সংখ্যা স্পষ্ট নয়, তবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মতে—সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইউক্রেনের প্রায় দুই হাজার সৈন্য আত্মসমর্পণ করেছে।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের আজভ রেজিমেন্টের কমান্ডার বলেছেন—যুদ্ধক্ষেত্র থেকে মরদেহ সরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।