নদীর জায়গা নদীর কাছে ফিরিয়ে দেব : নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী
নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনা, অবৈধ দখল ও দূষণের বিরুদ্ধে কাজ করছি। নদীমাতৃক বাংলাদেশকে ধরে রাখতে চাই। নদীর প্রবাহ ঠিক রাখতে ড্রেজার বেইজ স্থাপন করা হচ্ছে। নদীর জায়গা নদীর কাছে ফিরিয়ে দেব।
আজ সোমবার বরিশালে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজার বেইজ উদ্বোধন উপলক্ষে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশাল এখন সেই জায়গায় নেই। এখানকার নদীনালা খালগুলো পুনরুদ্ধার করতে হবে। বরিশালে অত্যাধুনিক নদীবন্দর স্থাপন করা হবে। দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য বন্দরগুলোর আধুনিকায়ন করা হবে। প্রশিক্ষিত জনবল ও নিরাপদ নৌযানের মাধ্যমে নৌঝুঁকি ধীরে ধীরে শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসব। নদীর দখল ও দূষণ নিয়ে দেশের ১৭ কোটি মানুষ এখন কথা বলে- এটাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সফলতা।
তিনি আরও বলেন, আমরা মানুষকে দখল ও দূষণ সম্পর্কে সচেতন করতে পেরেছি। নদীর দখল ও দূষণকে চিহ্নিত করে নদীর জায়গা নদীর কাছে ফিরিয়ে দিব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীনের পর নৌপথ খননের জন্য সাতটি ড্রেজার এনেছিলেন। এরপর দীর্ঘ সময় সরকারি ড্রেজার আসেনি। নৌপথ খননের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ৪০টি ড্রেজার সংগ্রহ করেছে। আরও ৩৫টি ড্রেজার সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দুটি উদ্ধারকারী জাহাজ সংগ্রহ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১ বছর দেশের কোনো উন্নয়ন হয়নি। গত ৪০ বছরে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে ; তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি হয়েছে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ১৩ বছরের শাসনামলে। বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করছেন। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল।
বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. ওয়াহিদুর রহমান, অতিরিক্ত ডিআইজি মো. এনামুল হক, পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো.শহীদুল ইসলাম।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপির কষ্ট হচ্ছে কেন বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, সিরিয়া ও লিবিয়ার মতো মতো হচ্ছে না? তাদের মনের চিন্তা বাংলাদেশ দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশ হবে। তাদের কাজ আতঙ্ক সৃষ্টি করা। তারা বাংলার মানুষকে বিপদে ফেলতে ষড়যন্ত্র করছে। এসব ষড়যন্ত্র থেকে আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, দ্রুত ও স্বল্প সময়ে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজারসমূহ মেরামত, সংরক্ষণ ও অপারেশনে সহায়তার লক্ষ্যে সরকার দেশে পাঁচটি ‘ড্রেজার বেইজ' স্থাপন করছে। আজ বরিশালে ড্রেজার বেইজ উদ্বোধন করা হয়। ২০১৮ সালের নভেম্বরে বরিশাল ড্রেজার বেইজের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এ ড্রেজার বেইজটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২৪ কোটি টাকা। এতে ছয়তলা অফিস ভবন, পাঁচতলা স্টাফ ডরমেটরি রয়েছে। বরিশালের ড্রেজার বেইজটি বরিশাল এলাকাসহ ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরগুনা এলাকায় নৌপথ খননে তদারকি সহজতর হবে। বরিশাল লঞ্চঘাটসহ অন্যান্য ঘাটগুলোর ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারি আরিচায় অবস্থান করে সার্বক্ষণিক ও সুষ্ঠুভাবে বন্দর কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জে ড্রেজার বেইজ উদ্বোধন করা হয়েছে। খুলনায় ড্রেজার বেইজ উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। নতুন আরও ছয়টি ড্রেজার বেইজ নির্মাণের কার্যক্রম চলছে।