নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার প্রাসঙ্গিকতা আজীবন থাকবে : ঢাবি উপাচার্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, “কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১০০ বছর আগে যে ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি রচনা করেছিলেন, সেটির প্রতিফলিত দর্শনের আবেদন, প্রাসঙ্গিকতা, প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব আজীবন থাকবে।”
‘বিদ্রোহীর শতবর্ষ’—প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে আজ বুধবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কবির সমাধি প্রাঙ্গণে ঢাবি আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন উপাচার্য আখতারুজ্জামান।
এর আগে আজ সাড়ে ৬টার দিকে উপাচার্যের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শোভাযাত্রা, কবি’র সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সূরা ফাতেহা ও দোয়া পাঠ এবং মোনাজাতে অংশ নেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
পরে ঢাবি উপাচার্যের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় শুভেচ্ছা বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া এবং স্মারক বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বেগম আখতার কামাল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ আজিজুল হক।
এ ছাড়া সভায় ঢাবির উপ-উপাচার্য ড. মুহাম্মাদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সাহাসহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “কাজী নজরুল ইসলাম একাধারে একজন কবি, প্রাবন্ধিক, লেখক, গল্পকার ও সংগীতজ্ঞ। নজরুল তাঁর কবিতা ও গানে যে দর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন, তা দিয়েই তিনি পরিচিতি লাভ করেছেন। মানুষের জীবনই এক ধরনের বিদ্রোহ। মানুষের জীবন যতক্ষণ থাকে, ততক্ষণ তাঁর মধ্যে এক ধরনের সংগ্রাম ও চেতনাবোধ কাজ করে। এ জন্য কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১০০ বছর আগে, যে ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি রচনা করেছেন, সেটির প্রতিফলিত দর্শনের আবেদন, প্রাসঙ্গিকতা, প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব আজীবন থাকবে। তিনি নানাভাবেই আমাদের মধ্যে পরিচিত ছিলেন। তিনি কখনও সাম্যের কবি, কখনও ভালোবাসার কবি, কখনও অসাম্প্রদায়িকতার কবি, কখনও সম্প্রীতির কবি, আবার কখনও বিদ্রোহী কবি। আমরা তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।’
ঢাবি উপাচার্য আরও বলেন, ‘জাতীয় কবির মর্যাদা লাভ এবং কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পাওয়ার পেছনে যিনি মূল ভূমিকায় ছিলেন, তিনি হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ জন্য আমরা তাঁর প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। বঙ্গবন্ধুও মূলত নজরুল ভক্ত ছিলেন। সংকটে, বিপদে এবং যেকোনো দূর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে কবির গান-কবিতা আমাদের শক্তি যোগায়। এজন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন জাতীয় আন্দোলন এবং সংগ্রামগুলোতে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তখন তিনি আমাদের জাতীয় কবিকে স্মরণ করতেন। তার গান ও কবিতা থেকে তিনি শক্তি এবং সাহস সঞ্চার করতেন।”