কক্সবাজারে ৩৯৬ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস
কক্সবাজার সীমান্তসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযানে জব্দ ৩৯৫ কোটি ৭৬ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭৫ টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। কক্সবাজার অঞ্চলের বিজিবি সদস্যেরা বিগত এক বছরে এই মাদক জব্দ করেন। আজ শুক্রবার বিজিবি’র সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিগত এক বছরে পরিত্যাক্ত অবস্থায় জব্দ করা ৯০ লাখ ৮০ হাজার ৪৭৭ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২৩ দশমিক ৭৫২ কেজি ক্রিস্টালমেথ আইস, ছয় হাজার ৭৬৭ ক্যান বিয়ার, এক হাজার ৩৩৯ বোতল মদ, ১৫৪ বোতল ফেন্সিডিল, ২০৬ লিটার বাংলা মদ, ১৭ কেজি গাঁজা, ৪৮ হাজার ১৯ পিস বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলেট, ১০ হাজার ৯৮৪ প্যাকেট সিগারেট এবং সাত বোতল এ্যামোনিয়াম সালফার ধ্বংস করা হয়েছে। এসবের আনুমানিক মূল্য ৩৯৫ কোটি ৭৬ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭৫ টাকা।
এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আটক করা এক হাজার ৯৭৯ জন আসামিসহ এক কোটি ২৪ লাখ ৪৩০ পিস ইয়াবা ট্যালেট, ২৭ দশমিক ৪৪৮ কেজি ক্রিস্টালমেথ আইস, এক হাজার ৩০৫ ক্যান বিয়ার, ৯৮ বোতল বিভিন্ন ধরনরে মদ, ১৩৭ বোতল ফেন্সিডিল, ৫৮৬ দশমিক ৮০০ লিটার বাংলা মদ, ২২ দশমিক ৯৯৫ কেজি গাঁজা এবং ৩ দশমিক ১৫০ কেজি আফিম পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হস্তান্তর করা মাদকদ্রব্যসমূহের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫১০ কোটি ৯০ লাখ ১৩ হাজার ৫৭২ টাকা।
এ উপলক্ষে বিজিবি’র কক্সবাজার অঞ্চলের উদ্যোগে মাদকদ্রব্য ধ্বংস অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও কক্সবাজারের সংসদ সদস্যরা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক, জিওসি ১০ পদাতিক ডিভিশনসহ উচ্চপদস্থ সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং সাংবাদিকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে কক্সবাজার অঞ্চলের বিজিবি সদস্যরা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করায় তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এরপর তিনি নিজ হাতে ক্রিস্টালমেথ আইস ও ইয়াবা ধ্বংসকরণের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য ধ্বংস কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মাদকের বিরুদ্ধে বিজিবি’র অভিযানিক কার্যক্রম নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। এরপর বিজিবি’র কক্সবাজার অঞ্চলের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজম-উস-সাকিব স্বাগত বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন এবং বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ।
মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন ও সার্বজনীন প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘সীমান্তে মাদক পাচার রোধে বিজিবি সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।’
বিজিবিকে বিশ্বমানের একটি আধুনিক ত্রিমাত্রিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। একইসঙ্গে প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজিবি’র পাশে থেকে সাহস জোগানোর জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানান।