বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়া স্মরণীয় বিজ্ঞানী : মোস্তাফা জব্বার
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন জাতির জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করায় ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া সবার জন্য আদর্শ হয়ে থাকবেন। এবং তাঁর অবদানের জন্য মানুষ তাঁকে চিরকাল স্মরণ করবে।
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকায় মোহাম্মদপুরে বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগার মিলনায়তনে স্মৃতি পাঠাগার আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মোস্তাফা জব্বার এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘তিনি (ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া) ছিলেন একজন নম্র, ভদ্র, সদালাপী, নির্লোভ, নিরহংকারী ও উদারনৈতিক মানুষ। বিশিষ্ট এ পরমাণু বিজ্ঞানী বিজ্ঞানের যুক্তি দিয়েই সবকিছু বিবেচনা করতেন।’ সে বিজ্ঞানমনস্কতা তাঁর জীবনের প্রত্যেকটি কর্মে প্রতিফলিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
আজ বুধবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ক্ষমতার অনেক কাছাকাছি থেকেও কখনও ক্ষমতা দেখাননি। এটাই ছিল তাঁর জীবনের অন্যতম বড় একটি দিক। মেধাবী এ মানুষটি নীরবে- নিভৃতে নিরলসভাবে গবেষণায় থেকে দেশের উন্নয়নের জন্য আমৃত্যু কাজ করে গেছেন।’
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ওয়াজেদ মিয়া সত্যিকার অর্থেই একজন অতি উঁচু মানের বিজ্ঞানী ছিলেন। তিনি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে তাঁর স্বপ্ন ছিল। বর্তমানে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে।’
মোস্তাফা জব্বার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার নামে নামকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভূমিকা গ্রহণের অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘জাতির জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করায় ড. ওয়াজেদ মিয়া সবার জন্য আদর্শ হয়ে থাকবেন এবং তাঁর অবদানের জন্য মানুষ তাকে চিরকাল স্মরণ করবে।’
বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উপদেষ্টা, সাবেক সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য শিরিন আহমেদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, পাঠাগার পরিচালনা কমিটির সদস্য অতিরিক্ত সচিব ড. আবুল কালাম আজাদ, ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ভ্রাতুষ্পুত্র ইঞ্জিনিয়ার সাঈদ রেজা শান্ত, ভাইয়ের কন্যা আক্তার বানু লিপি, পাঠাগারের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক কার্জনুর রহমান এবং পাঠাগার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুন নবী ভোলা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
ছবি বিশ্বাস বলেন, ‘ড. ওয়াজেদ নিরলসভাবে গবেষণায় থেকে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে গেছেন।’
বক্তারা বলেন, ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ও মানুষের কল্যাণের কথা ভাবতেন। তাঁরা ওয়াজেদ মিয়ার শিক্ষা ও জ্ঞানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশবাসীকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৬১-’৬২ শিক্ষা বছরের জন্য হল ছাত্র সংসদের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলনের কারণে গ্রেপ্তার হন। ১৯৬৩ সালের ১ এপ্রিল তিনি তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে যোগ দেন।
মোস্তাফা জব্বার বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা একটি বইসহ ২০২১ সালে প্রকাশিত তাঁর লেখা সাতটি বই এবং মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রকাশিত শত ডাক টিকিটের একটি অ্যালবাম হস্তান্তর করেন। তিনি পাঠাগারটিকে ডিজিটাইজ করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে তাঁর ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।