ভর্তি পরীক্ষায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে শক্ত গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে : ঢাবি উপাচার্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, ‘আমাদের পরীক্ষা ব্যবস্থাপনায় শক্ত গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে। কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং পরীক্ষার হলে কোনো অসাধু চক্রের নেতিবাচক কোনো কর্মকাণ্ডের প্রভাব এড়ানোর লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সব মহলই যথেষ্ট সজাগ রয়েছেন।’
ঢাবির ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান।
এ সময় ঢাবি উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমরা দুটি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলের পরিবেশ, প্রশ্নপত্রের মান এবং ব্যবস্থাপনা সবকিছু নিয়েই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এবার ‘খ’ ইউনিটে আসনপ্রতি প্রায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছেন। এজন্য বলা যায়, পরীক্ষায় বিরাট একটি প্রতিযোগিতা রয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাই হলো আমাদের সৌন্দর্য।’
পরীক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, ‘পরীক্ষা চলাকালে আপনাদের সবার একটু সহযোগিতা প্রয়োজন। সেটি হলো—পরীক্ষার বাইরের পরিবেশ ঠিক রাখা। পরীক্ষার্থীদের চলাচলে যেন কোনো রকম অসুবিধা না হয়, এ জন্য যানজট এবং অতিরিক্ত ভিড় এড়াতে লোকজন যাতে কম আসে, সেজন্য আমরা অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু, তারপরও দেখা যাচ্ছে যে, বিপুল সংখ্যক শুভাকাঙ্ক্ষী বা অভিভাবক পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে আসেন। এ ব্যাপারে আমাদের একটু সাংস্কৃতিক উন্নয়ন লাগবে। কারণ, এখন যে শিক্ষার্থী অনার্সে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য পরীক্ষা দিতে আসেন, তিনি তো যথেষ্ট ম্যাচিওর্ড। তিনি সবকিছু করতে সক্ষম এবং তাঁর বয়স ১৮ বছর। এখন তাঁর নিজের কাজ নিজে করানোর মতো সক্ষমতা গড়ে তোলা আমাদের কর্তব্য। নিজের কাজ নিজে যখন করা শিখবে, তখন ওই শিক্ষার্থীর গুণগতমান এবং অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে বৃদ্ধি পাবে।’
ঢাবি উপাচার্য আরও বলেন, ‘শুভাকাঙ্ক্ষী এবং অভিভাবকদের অনুরোধ করব যে, আপনাদের সন্তানদের একটু ছেড়ে দিন। ওরা যখন নিজেদের মতো করে কাজ করতে শিখবে, সেটাও কিন্তু তাদের জন্য একটি বড় প্রশিক্ষণ, যা তাদের আরও বেশি শক্তিশালী করবে এবং জ্ঞান অর্জনে সক্ষম এবং একজন সামর্থ্যবান মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য সহায়তা করবে। আমাদের সময় আমরা একাই পরীক্ষা দিতে এসেছিলাম। তখন আমাদের অভিভাবক ছিলেন আমাদের শিক্ষকেরা।’
পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষা ব্যবস্থাপনায় যাঁরা আছেন, তাঁরা সব নিয়ম-নীতির আলোকেই সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা এবং সব দপ্তর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে। এটা খুবই লক্ষণীয় ব্যাপার।’
ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘ঢাকা থেকে বিভাগীয় শহরের কেন্দ্র পর্যন্ত, আবার কেন্দ্রগুলো থেকে ঢাকা পর্যন্ত, এর মধ্যে যত ব্যবস্থাপনা আছে, সবকিছুতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহযোগিতা করে থাকে। এ ছাড়া পরীক্ষা ব্যবস্থাপনায় শক্ত গোয়েন্দা নজরদারিও রয়েছে। কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং পরীক্ষার হলে অসাধু চক্রের নেতিবাচক কোনো কর্মকাণ্ডের প্রভাব এড়ানোর লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সব মহলই যথেষ্ট সজাগ রয়েছে।’
নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাংবাদিকদের ভূমিকার ব্যাপারে উপাচার্য বলেন, ‘নিরাপত্তা নিশ্চিতে আপনাদের (সংবাদকর্মীদের) ভূমিকাও মূখ্য। কারণ, আপনারা যখন যে তথ্য পান, সেটা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার কারণে ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থাপনায় যাঁরা থাকেন, তাঁরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হন। এজন্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আপনাদেরও অসাধারণ ভূমিকা রয়েছে।’