কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ : ফায়ার সার্ভিসের ৫ সদস্যের মরদেহ উদ্ধার
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ সদস্য রয়েছেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
সিতাকুণ্ডে আজ রোববার সকালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল বিএম কনটেইনার ডিপো পরিদর্শনে গিয়ে এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক।
আগুন নেভানো এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান, এ ধরনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হলেও ঘটনাস্থলে মালিকপক্ষের কারও উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে না। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় আগুন নেভাতে জটিলতায় পড়তে হচ্ছে।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।
বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ও আহত ব্যক্তির সংখ্যা দেড় শতাধিক বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস এবং পুলিশের অনেক সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার রাত ৯টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের পর এ বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত চার কিলোমিটার এলাকা। এ ছাড়া আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ে।
জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো কর্মচঞ্চল এ কনটেইনার ডিপোটিতে হঠাৎ গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে। কেমিক্যালের কয়েকটি কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তেই আশপাশের চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার এলাকার অনেক বাসা-বাড়ির জানালার কাঁচও ভেঙে পড়ে এ বিকট শব্দে। এর মধ্যে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হতাহত বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু, ডিপোটিতে থাকা কিছু কনটেইনারে রাসায়নিক পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্টদের।
এ ঘটনার পর আহত ব্যক্তিদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে, একসঙ্গে এত রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম অবস্থা চমেক হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। পরে চট্টগ্রামের জেনারেল হাসপাতাল, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালসহ (সিএমএইচ) বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আহত ব্যক্তিদের পাঠানোর উদ্যোগ নেয় প্রশাসন।
এদিকে, মানবিক কাজে সব স্বাস্থ্যকর্মী এগিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী। এ ছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতালসহ সব চিকিৎসককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও বিভাগীয় প্রশাসন।