দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ আর অবহেলিত থাকবে না : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২৫ জুন বহুলপ্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ জনপদের মানুষ আর অবহেলিত থাকবে না।’ তাঁর সরকার দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে বলে পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার সকালে পল্লী জনপদ, রংপুর এবং বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বাপার্ড), কোটালিপাড়া, গোপালগঞ্জের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চল বা পদ্মাপারের মানুষ বরাবরই অবহেলিত ছিল। দারিদ্র্য আমাদের নিত্যসঙ্গী। আল্লাহর অশেষ রহমতে সে পরিস্থিতি আর থাকবে না। কারণ, আমরা একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করেছি, যা আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এ উপলক্ষ্যে পল্লী জনপদ, রংপুর এবং বাপার্ড, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ প্রান্তে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে দক্ষিণাঞ্চলের জনগণ সারাজীবন অবহেলিত ছিল, এখন আর অবহেলিত থাকবে না। কারণ, একটা জায়গায় যদি যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়, তাহলে সেখানকার অর্থনৈতিক অবস্থা এমনিতেই উন্নত হয়। এটাই হলো বাস্তবতা।’
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, পদ্মা সেতু জাতীয় অর্থনীতি জোরদারে বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের জনগনের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে অবদান রাখবে। তিনি আরো বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের জনগণকে উন্নত জীবন উপহার দিতে আমরা চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের জনগণের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছি। আমরা উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি লাভ করেছি এবং আমাদেরকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। দেশের একজন লোকও গৃহহীন ও ক্ষুধার্ত থাকবে না।’
আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা সবাইকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সেতু উদ্বোধনের পর সেখানে গাড়ি নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতা কেউ যেন না করেন, যাতে কোন ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটতে পারে।’
পদ্মা সেতুর স্থপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ উৎসব কেবল পদ্মাপারেই হবে না, সারা দেশের প্রত্যেক জেলায় এ সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মহোৎসব হবে। কারণ, এটা ছিল আমাদের জন্য একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে খরস্রোতা নদীগুলোর অন্যতম এ পদ্মায় বাংলাদেশ যে সেতু নির্মাণ করতে পারে, সেটা অনেকেরই ধারণায় ছিল না। তারপর আবার সেতুটি একটি দ্বিতল সেতু, নিচ দিয়ে ট্রেন এবং ওপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করবে। যেটা অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ এবং পৃথিবীতে এ ধরনের কাজ বোধ হয় এটাই প্রথম। এখানে যে ধরনের মেশিনারিজ ব্যবহৃত হয়েছে, সেটাও বোধ হয় আর কোথাও হয়নি। আর এ সেতু নির্মাণে যে বাধা-বিপত্তি ছিল সেটাও আপনারা জানেন।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, এ সেতু করতে গিয়ে তাঁর এবং তাঁর পরিবার ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ আনা হলে তিনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে সে অভিযোগ প্রমাণের আহবান জানান।
‘কারণ, আমরা এখানে (রাষ্ট্র পরিচালনায়) দুর্নীতি করতে আসিনি, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন এবং মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মো. মশিউর রহমান স্বাগত বক্তৃতা দেন। অনুষ্ঠানে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একটি ভিডিও চিত্রও প্রর্দশন করা হয়।