সাঈদীর সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে আইনজীবীরা
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সঙ্গে দেখা করতে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে গেছেন তাঁর চার আইনজীবী।
আজ বুধবার দুপুর ১টার কিছু সময় পর কাশিমপুর কারাগারে প্রবেশ করেন সাঈদীর চার আইনজীবী সাইফুর রহমান, তাজুল ইসলাম, মতিউর রহমান আকন্দ ও ইউসুফ আলী। সাঈদীর সঙ্গে দেখা করার জন্য তাঁদের ৩০ মিনিট সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশের রায় থেকে খালাস চেয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের (রিভিউ) বিষয়ে সাঈদীর সঙ্গে আলোচনা করতেই কারাগারে গেছেন তাঁর আইনজীবীরা।
এ বিষয়ে সাইফুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রিভিউ করার বিষয়ে তাঁর (সাঈদী) সঙ্গে পরামর্শের জন্য আমরা দেখা করতে যাচ্ছি। কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। সাঈদী সাহেবের সঙ্গে আলাপ করেই রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষ রিভিউ আবেদন করার পর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রিভিউ করবেন বলে এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেন তাঁর আইনজীবী ব্যারিস্টার তানভির আল-আমিন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর খালাস চেয়ে আগামীকালের মধ্যে রিভিউ আবেদন করব। আগামীকাল প্রস্তুতি শেষ না হলে বৃহস্পতিবার আবেদন করব।’
গতকাল মঙ্গলবার সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ চেয়ে রিভিউ আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আবেদনের মূল ৩০ পৃষ্ঠাসহ মোট ৬৫৩ পৃষ্ঠার নথি আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি যুক্তিতে রিভিউ আবেদনে ইব্রাহিম কুট্টি ও বিশা বালি হত্যা এবং শেফালী ঘরানী ও মাখন সাহার দোকান লুটের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে।
এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর সাঈদীর রায় প্রদানকারী পাঁচজন বিচারপতির স্বাক্ষরের পর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৬১৪ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আপিল বিভাগের রায় প্রকাশের পর ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করা যাবে। সে হিসেবে আগামী ১৫ জানুয়ারি রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করার শেষ দিন সাঈদীর।
২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেন। অন্য চার বিচারপতি হলেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর বিরুদ্ধে গঠিত ২০টি অভিযোগের মধ্যে আটটি প্রমাণিত হয়। রায়ের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালায় জামায়াত-শিবির। সহিংসতায় প্রথম তিন দিনেই ৭০ জন নিহত হন। এই মামলায় আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের করা দুটি আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত বছরের ১৬ এপ্রিল আপিল বিভাগ রায় অপেক্ষমাণ রাখেন। এর ঠিক পাঁচ মাসের মাথায় রায় ঘোষণা করা হয়।