ঢাবিতেও সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থীদের কৃতিত্ব
মেডিকেল কলেজ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পর প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও (ঢাবি) কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছেন নীলফামারীর সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থীরা। এই কলেজের ৩১ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ঢাবির ‘ক’ ইউনিটে। প্রতিষ্ঠানটির এমন সাফল্যে খুশি শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা।
২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের প্রকাশিত ফলাফলে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছে বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা। ভর্তির সুযোগ পাওয়া ৩১ জনের মধ্যে ২৬ জন ছেলে এবং পাঁচজন মেয়ে। এর আগে একই শিক্ষাবর্ষে সরকারি মেডিকেল কলেজে ৩৯ জন এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পান।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ২৬৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয় ২৬৫ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ অর্জন করে ২৪৯ জন। এর মধ্যে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় ৩৯ জন, বুয়েটে ১৬ জন এবং সবশেষ ঢাবিতে ৩১ জন কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছে।
২০২১ সালে ৪০ জন, ২০২০ সালে ৪০ জন, ২০১৯ সালে ৩৬ জন ও ২০১৮ সালে ৩৮ জন শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান। প্রতি বছর মেডিকেল ছাড়াও বুয়েট, রুয়েট, চুয়েটসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা করে নেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ পাওয়া নূর আলম বলেন, ‘সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, এখানে পড়াশোনায় প্রতিযোগিতা থাকে। কে, কার চেয়ে ভালো করব; এটাই লক্ষ্য থাকে।’
নূর আলম আরও বলেন, ‘মা-বাবার দোয়া আর শিক্ষকদের সঠিক দিকনির্দেশনায় ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। এটা কতটা আনন্দের তা আমার বলার ভাষা নেই।’
ভর্তির সুযোগ পাওয়া আরেক শিক্ষার্থী ঈশিকা বলেন, ‘শিক্ষকরা কঠোর তদারকি করতেন। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আমাদের পড়াশোনা বিশ্লেষণ করতেন। এ কারণে সুফল পাই আমরা শিক্ষার্থীরা। আজকে ঢাবিতে সুযোগ পাওয়ায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
অভিভাবক পরিতোষ কুমার রায় বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি আমাদের অভিভাবকদের মধ্যে সাহস যুগিয়েছে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে আমরা সোচ্চার হচ্ছি এবং শিক্ষকদের কঠোর মনিটরিংয়ের ফলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানটির ব্যতিক্রমী, প্রক্রিয়াটা ভালো। শিক্ষার্থীরা এর সুফল ভোগ করছে।’
সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম আহমেদ ফারুক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এই অর্জনে আমরা গর্বিত। প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইঞ্জিনিয়ারিং গুচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী রয়েছে। আমরা এখানে শিক্ষার্থীদের গ্রিন-ক্লিন লার্নিং পদ্ধতিতে পড়ানোর চেষ্টা করি। এতে সবার মধ্যে প্রতিযোগিতা ও মননশীলতা বৃদ্ধি পায়।’
প্রসঙ্গত, ১৯৬৪ সালে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই সময় প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি স্কুল। পরে এটিকে ১৯৭৭ সালে কলেজে উন্নীত করা হয়। তখন সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি বিজ্ঞান মহাবিদ্যালয় নামকরণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে গত ২০২০ সালে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ নতুন নাম করা হয়েছে।