খালাস চেয়ে সাঈদীর রিভিউ আবেদন
মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রিভিউ আবেদন করেছেন। সে আবেদনে তিনি দণ্ডাদেশ থেকে খালাস চেয়েছেন।
সাঈদীর আইনজীবী সাইফুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সাইফুর রহমান জানান, আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে রিভিউ আবেদনটি করা হয়। ওই আবেদনে সাঈদীর খালাস চাওয়া হয়েছে।
সাইফুর আরো জানান, যে অভিযোগগুলোতে সাঈদীকে সাজা দেওয়া হয়েছে, সে অভিযোগগুলোর দুর্বলতা তুলে ধরা হয়েছে রিভিউ আবেদনে। তিনি জানান, রিভিউ আবেদনের বিষয়ে আজ দুপুর ১টার দিকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবেন সাঈদীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।
এর আগে ১৩ জানুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে সাঈদীর সঙ্গে দেখা করেন তাঁর আইনজীবীরা। ওই সময় সাঈদী তাঁর রিভিউ আবেদন করতে বলছিলেন।
আগের দিন ১২ জানুয়ারি সাঈদীর রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ রিভিউ আবেদন করে। ওই আবেদনের মূল ৩০ পৃষ্ঠাসহ মোট ৬৫৩ পৃষ্ঠার নথি আদালতে জমা দেওয়া হয়।
পাঁচটি যুক্তিতে রিভিউ আবেদনে ইব্রাহিম কুট্টি ও বিশা বালি হত্যা এবং শেফালী ঘরানী ও মাখন সাহার দোকান লুটের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর সাঈদীর রায় প্রদানকারী পাঁচজন বিচারপতির স্বাক্ষরের পর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৬১৪ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।
সাঈদীর মামলার সারসংক্ষেপ : ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেন। অন্য চার বিচারপতি হলেন—বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর বিরুদ্ধে গঠিত ২০টি অভিযোগের মধ্যে আটটি প্রমাণিত হয়। রায়ের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালায় জামায়াত-শিবির। সহিংসতায় প্রথম তিন দিনেই ৭০ জন নিহত হন। এই মামলায় আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের করা দুটি আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত বছরের ১৬ এপ্রিল আপিল বিভাগ রায় অপেক্ষমাণ রাখেন। এর ঠিক পাঁচ মাসের মাথায় রায় ঘোষণা করা হয়।