দলীয় সরকার কিংবা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি—এমনটা জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, ‘অনির্বাচিত সরকারকে আর ছাড় দেওয়া হবে না। কীভাবে এই সরকারের পতন ঘটানো যায়, আমরা সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গতকাল শনিবার প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর যুবদল (উত্তর-দক্ষিণ) এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। যশোর জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধনি হত্যার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ইভিএম বুঝি না, ইভিএম চিনি না। কাজেই আগামী নির্বাচন ইভিএমে, না কি অন্যভাবে—সেটা বিষয় নয়, বিএনপি দলীয় সরকার কিংবা শেখ হাসিনাকে দায়িত্বে রেখে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনের জন্য বিএনপি প্রস্তুত নয়। বরং কীভাবে এই সরকারের পতন ঘটানো যায়, আমরা সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘৪০ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়ে থাকে, হতে পারে, তাহলে প্রয়োজনে আপনাদেরও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, বিচার হবে। আমরা যদি তখন বেঁচে নাও থাকি, আপনাদের বিচার করার লোকের অভাব হবে না।’

ক্ষমতাসীনদের উন্নয়নের সমালোচনা করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন চলমান প্রক্রিয়া। আপনারা যদি এতো উন্নয়ন করে থাকেন, তাহলে ছেড়ে দেন ক্ষমতা, পদত্যাগ করুন। জনগণ খুশি হলে আপনাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে, আমরাও মেনে নেব। বেশি কিছু তো চাচ্ছি না—আমরা শুধুমাত্র একটি বিষয় চাচ্ছি, সেটি হলো নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন।’

‘বিএনপি একটি পতিত দল’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের তীব্র সমালোচনায় আব্বাস বলেন, ‘জেলখানায় কান ধরে যিনি বলেছিলেন, জীবনে আর কোনদিন রাজনীতি করবেন না, আজ তিনি বলেন—বিএনপি পতিত দল। আমার কথা হচ্ছে, বিএনপি যদি পতিত দল হয়, তাহলে বিএনপিকে নিয়ে আপনাদের এত ভয় কেন? কেন বিএনপিকে মিটিং, মিছিল, সভা সমাবেশ করতে দিতে চান না।’

পদ্মা সেতুতে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সেলফি তোলার সমালোচনায় মির্জা আব্বাস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও ব্যক্তি শেখ হাসিনা এক নয়, এটা বুঝতে হবে। আমার কথা হলো, নির্দেশনা দিয়ে নির্দেশনা ভঙ্গের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হয় পুরস্কার নতুবা তিরস্কার পাওয়া উচিত।’

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন হাসান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না প্রমুখ।