আমাদের আন্দোলনেই খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়েছিলেন : তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেন সরকারের আমলে গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আমাদের আন্দোলনেই মুক্তি লাভ করেছিলেন। ওইসময় বিএনপি কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি।
জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ রোববার এক আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন। এসময় তিনি আরও বলেন, বিএনপির রাজনীতি এখন আর মাঠে নেই। তারা রাত-বিরাতে বিভিন্ন দূতাবাসে ধরনা দিচ্ছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ভোরে বিনা ওয়ারেন্টে সবাইকে অবাক করে দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গ্রেপ্তার করেও অন্যায়-অনাচারের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার প্রতিবাদ স্তব্ধ করা যায়নি। কারণ সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুর্নীতি-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলে ক্ষমতা গ্রহণ করলেও তারা নিজেরাই নানা অনাচার-দুর্নীতির সাথে যুক্ত হয়ে গিয়েছিল।
ওয়ান ইলেভেন সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বিবরণ দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ওইসময় স্বামীর অপরাধে অসুস্থ স্ত্রীকে গ্রেপ্তার, বাবার অপরাধে নাবালিকা সন্তানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, গণতন্ত্রকে শিকলবন্দি করা হয়েছিল। রাজনৈতিক নেতাদের ওপর নজরদারি, সভা-সমাবেশে যাওয়া বন্ধ করা হয়েছিল। তখন একমাত্র শেখ হাসিনা অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন।
আপসহীন বঙ্গবন্ধুকন্যাকে গ্রেপ্তার করেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার প্রতিবাদী কণ্ঠ স্তব্ধ করা যায়নি উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, কারাগারে থেকেই জননেত্রী যেভাবে দল পরিচালনা করেছেন আর তার প্রতিনিধি হিসেবে শ্রদ্ধাভাজন প্রয়াত নেতা জিল্লুর রহমান যেভাবে দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন, সেই কারণেই আমরা ২০০৮ সালের ১১ জুন বঙ্গবন্ধুকন্যাকে মুক্ত করতে পেরেছিলাম। খালেদা জিয়া গ্রেপ্তারের পর বিএনপি কোনো আন্দোলন করতে পারেনি, আমাদের আন্দোলনে খালেদা জিয়াও মুক্তি লাভ করেছিলেন।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির রাজনীতি এখন আর মাঠে নেই। রাতের বেলায় বিভিন্ন দূতাবাসে যাওয়া, পার্টি করা হচ্ছে তাদের রাজনীতি। আমি তাদের অনুরোধ জানাবো, রাতবিরাতে এদিক সেদিক ঘুরে ফিরে, দূতাবাসে ধরনা দিয়ে কোনো লাভ হবে না। আপনারা জনগণের কাছে যান। এগুলো ২০১৪ সালেও করেছিলেন, ২০১৮ সালেও করেছিলেন, কোনো লাভ হয়নি। এবারও কোনো লাভ হবে না।’
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল-আইএমএফ প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন পৃথিবীর ৪১তম উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইএমএফ তালিকায় অর্থনীতিতে পৃথিবীর প্রথম ৫০টি দেশের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া থেকে মাত্র দুটি দেশ- ভারত ও বাংলাদেশ। ২০২৫ সালে আমাদের অর্থনীতি আরও ওপরের দিকে যাবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এইভাবে দেশ যখন এগুচ্ছে, করোনা মহামারির মধ্যে আমাদের মাথাপিছু আয় ভারতকেও ছাড়িয়েছে, তখন বিএনপি এবং কিছু গোষ্ঠী প্রার্থনা করছে; বাংলাদেশটা কেন শ্রীলঙ্কা হচ্ছে না। কারণ তারা নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করতে চায়।'
স্বপ্ন ফাউন্ডেশনের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।