১০ লাখ টাকা নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করলেন সুবাহ
গায়ক ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা আপস করেছেন অভিনেত্রী শাহ হুমায়রা সুবাহ। গতকাল সোমবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক আবেরা সুলতানা খানমের আদালতে সুবাহ এই আপসের কথা বলেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আফরোজা আহমেদ অরেঞ্জ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আদালতে সুবাহ বিচারককে বলেন, আমরা পারিবারিকভাবে ১০ লাখ টাকায় মামলা মীমাংসা করেছি। টাকা আমি বুঝে পেয়েছি। এখন ইলিয়াসের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই।
সুবহার দাবি, এই ১০ লাখ টাকা নেওয়ার কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে ফেসবুকে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন সুবহা।
ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘দীর্ঘ ৫-৬ মাস ধরে ইলিয়াসের পরিবার ও আমার পরিবার মিলে মীমাংসার জন্য আমাকে বলা হচ্ছিল। তাই আমি তাদের সঙ্গে মীমাংসা করে নিয়েছি এবং মামলা তুলে নিয়েছি। সেও তাই করেছে, আর যা হয়েছে দুজনের জীবনের ভালোর জন্যই হয়েছে। এখন দেনমোহরের টাকা আর কিছু ক্ষতিপূরণ দিয়ে সাধু হওয়ার চেষ্টায় আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করেই যাচ্ছে সামাজিকভাবে। দেনমোহরের টাকা দিয়ে এত নাটক করার কি আছে?’
সুবহা লিখেছেন, ‘না দিতে পারলে বলত আমরা দিতে পারব না। মীমাংসার সময়ে কিন্তু এই কথাগুলো বলেনি তার পরিবার। শুধুমাত্র আমাকে ছোট করার জন্যই সামাজিকভাবে এসব বলা এবং করা হচ্ছে। অথচ মীমাংসার আপসনামায় স্পষ্ট করে লেখা আছে কেউ কারও বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে কোনো হেয় প্রতিপন্নমূলক কথা একে-অপরকে বলব না এবং একে-অপরের মামলা নিজ দায়িত্বে তুলে ফেলব।
‘বিয়ের পর আইনগতভাবে দেনমোহরের ভরণপোষণ, খোরপোষের টাকা প্রতিটা মেয়ের প্রাপ্য অধিকার এবং এটি অবশ্যই হালাল, ইসলামিক শরীয়া মোতাবেক। কারণ তার সঙ্গে আমার ভালোবেসে বিয়ে হয়েছিল। সংসার তো আমি শেষঅবধি করতে চেয়েছি, শুধু সংসার বাঁচানোর জন্য আমি তো তার মতো তাঁকে ছেড়ে কোথাও যাইনি।’
সুবাহা আরও লিখেছেন, আর আমি তাদের মতো কাউকে বলিনি, আসেন আমার সঙ্গে মীমাংসা করেন এবং টাকা দিয়ে আমাকে উদ্ধার করেন। আমি আর কোনো প্রকারের কাদা-ছোড়াছুড়ি করতে চাই না। আইনের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও আস্থা ছিল, আছে এবং থাকবে। সাংবাদিকদের কাছে এতটুকুই বলতে চাই, বিয়ের পর আমাদের জীবনে সমস্যা তৈরি হয়েছিল, তা আমরা পারিবারিক এবং আইনগতভাবে মিটিয়ে নিয়েছি। তাই একতরফা মনগড়া ভাইরাল হেডলাইন দিয়ে মানুষকে আর আমাদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে নিউজ করে বিভ্রান্ত করবেন না। নিজেরাও ভালো থাকুন, আমাকেও ভালো থাকতে দিন।’
নথি থেকে জানা গেছে, এ বছরের ৩ জানুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ)/৩০ ধারায় যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে ইলিয়াসকে আসামি করে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা করেন সুবাহ। এ মামলার পরে এ বছরের মার্চে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপ-পরিদর্শক মাসুমা আফ্রাদ ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এই মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ১১ জনকে।
এদিকে মামলার পরে ইলিয়াস উচ্চ আদালতের ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। কিন্তু আত্মসমর্পণ করে জামিন শুনানির দিন আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় গত ২২ মার্চ ইলিয়াসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক জুলফিকার হায়াত।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ ডিসেম্বর পারিবারিক আয়োজনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন সংগীতশিল্পী ইলিয়াস হোসাইন ও মডেল শাহ হুমায়রা সুবাহ।