নকলের অভিযোগ অপমানজনক, টেনে ধরার চেষ্টা করবেন না : সুমন
রুচিশীল দর্শকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে সমুদ্র, পানি, সম্পর্ক ও প্রতিশোধের গল্পের ‘হাওয়া’ সিনেমা। পোস্টার ও ট্রেইলারে মুগ্ধতা ছড়ানো সিনেমাটির গান ও প্রচারণার কৌশলে নতুন উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছে। মুক্তির আগেই অগ্রিম টিকেট বিক্রির হিড়িক পড়েছিল।
সেই ধারা এখনও অব্যাহত। মুক্তির প্রথম দিন থেকে সিনেমাটি হাউসফুল যাচ্ছে বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন ঢাকার একাধিক হলমালিক।
তবে মুক্তির পরেই নেটিজেনদের একাংশ এই সিনেমার বিরুদ্ধে নকলের অভিযোগ এনেছেন। অন্তর্জালে অনেককে দেখা যাচ্ছে নেগেটিভ রিভিউ (নেতিবাচক সমালোচনা) দিয়ে দর্শকের আগ্রহ ঠেকাতে।
এসবের কারণ জানতে সিনেমাটির পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের সঙ্গে আজ সোমবার সন্ধ্যায় এনটিভি অনলাইন কথা বলেছে। কিন্তু এসব নিয়ে কাউকে সরাসরি দোষারোপ করতে চান না তিনি।
মেজবাউর রহমান সুমন বলেছেন, “আমার সিনেমা নিয়ে যেসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে, এর আগে ‘টেলিভিশন’, ‘আয়নাবাজি', ‘দেবী’ সিনেমা নিয়েও এমন অভিযোগ তোলা হয়েছিল। কোনও সিনেমা ভালো চললে বা দর্শকের আগ্রহ থাকলে এসব অভিযোগ এনে সেই আগ্রহ ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়। টেনে ধরার চেষ্টা করা হয়।”
‘হাওয়া’ নিয়ে নেটিজেনদের একাংশ বলছেন, এটি কোরীয় সিনেমা ‘সি ফগর’ বা ‘অভিযান’-এর সঙ্গে মিল আছে। এমন নকলের অভিযোগ ‘অপমানজনক’ বলছেন সুমন। তাঁর ভাষ্যে সেটা এমন, ‘কোরিয়ান যে সিনেমার কথা বলা হচ্ছে, সেটা মানবপাচারের গল্প। আমার সিনেমা আঞ্চলিক গল্প...। এত বছর পরিশ্রম করে সিনেমা নির্মাণ করে নকলের অভিযোগ অপমানজনক। আমাদের বেশির ভাগ সিনেমাই নকলের ওপর দাঁড়ানো; দর্শনগতভাবে নকল। দৌড়াদৌড়ি, ওড়াউড়ি সবকিছুই নকল তো।’
সমালোচকদের উদ্দেশে সুমন বলেছেন, ‘গঠনমূলক সমালোচনা করুন; মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ভালো সিনেমাগুলোকে টেনে ধরার চেষ্টা করবেন না।’
টিভি ফিকশন ও বিজ্ঞাপনের খ্যাতিমান নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমনের পরিচালনায় ‘হাওয়া’ সিনেমাটির গল্প মাঝসমুদ্রে গন্তব্যহীন একটি মাছ ধরার ট্রলারে আটকে পড়া আট জন মাঝি-মাল্লা এবং এক রহস্যময় বেদেনিকে ঘিরে কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। মিস্ট্রি ড্রামা ঘরানার, ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রটি মূলত এ কালের রূপকথা। রূপকথানির্ভর সিনেমার প্রচলিত এ ফর্মটি সিনেমার পর্দায় নতুন আঙ্গিকে দেখতে পাবেন দর্শকেরা বলে জানাচ্ছে সিনেমাটির প্রযোজনা সংস্থা সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেড এবং নির্মাণ সংস্থা ফেইসকার্ড প্রোডাকশন।
মেজবাউর রহমান সুমনের কাহিনি এবং সংলাপে চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য লিখেছেন মেজবাউর রহমান সুমন, সুকর্ণ সাহেদ ধীমান এবং জাহিন ফারুক আমিন।
পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন জানিয়েছেন, ‘এটি সমুদ্র, পানি, সম্পর্ক ও প্রতিশোধের গল্প, যেখানে উপজীব্য সমুদ্র। গভীর সমুদ্র ও সেখানে মাছ ধরার ট্রলারকে কেন্দ্র করে নির্মিত গল্পের চলচ্চিত্র। ৮ জন মাঝিমাল্লার ও একজন বেদেনিকে নিয়েই গল্পটি তৈরি।’
তারকাবহুল এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, নাসির উদ্দিন খান, সোহেল মণ্ডল, রিজভী রিজু, মাহমুদ হাসান এবং বাবলু বোস। চিত্রগ্রহণ করেছেন কামরুল হাসান খসরু, সম্পাদনা সজল অলক, আবহ সংগীত রাশিদ শরীফ শোয়েব এবং গানের সংগীতায়োজন করেছেন ইমন চৌধুরী।