লিবিয়ায় নির্মম নির্যাতনের শিকার ফরিদপুরের যুবক
আঁতকে ওঠার মতো নির্মম নির্যাতনের শিকার ফরিদপুরের জনি মোল্লা। দেশে নয়, নির্যাতন চালানো হচ্ছে সুদূর লিবিয়ায়। নির্যাতনের আগে প্রতিদিন দুপরে লাইভ কল করা হচ্ছে জনির বাবা-মাকে। এরপর দেখানো হচ্ছে ছেলের ওপর চালানো বর্বরতা। কয়েক দিন আগে চাওয়া হয়েছে মুক্তিপণ। পুরোটা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় দিনকে দিন বেড়েই চলেছে নির্যাতনের মাত্রা। এখন দেওয়া হচ্ছে প্রাণনাশের হুমকিও।
জনির বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার চাদঁপুর গ্রামে। গত ৮ মাসে আগে দালালের মাধ্যমে দুবাই হয়ে লিবিয়ায় যান তিনি।
জানা যায়, কবির মোল্লা ও লাইলী বেগমের একমাত্র ছেলে জনি। বয়স ২৪। বিদেশে যাওয়ার ক’দিন আগে পায়েল নামে এক মেয়েকে বিয়ে করেন তিনি।
লিবিয়া যাওয়ার পর জনি তিন মাস তাঁর বাবাকে ৬৭ হাজার ৩০০ টাকা পাঠান। এরপর গত মাসের ১২ জুলাই থেকে জনির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তার কয়েক দিন পর ভিডিও কলে নির্মম নির্যাতন দেখানো হয়।
জনির পরিবারের দাবি, এসময় তাঁদের কাছে চার লাখ টাকা চাওয়া হয়। পরে জমি বিক্রি করে কানাইপুর ইসলামী ব্যাংকের একটি নম্বরে তিন লাখ টাকা দেন। এরপর চাওয়া হয় আরও এক লাখ টাকা। সে টাকা জোগার করা নিয়ে দেরি হলে নির্যাতন আরও বাড়তে থাকে। বাধ্য হয়ে তাঁরা ইসলামী ব্যাংকের নম্বরে ওই অ্যাকাউন্টের মালিকের বিরুদ্ধে গত ২৯ জুলাই মধুখালী থানায় মামলা করেন।
জানা যায়, মামলার পরের দিন ৩০ জুলাই ফেনী থেকে ওই প্রতারকচক্রের প্রধান মাহবুব ভূঁইয়ার রাজীবকে আটক করে মধুখালী পুলিশ। এরপর জনির ওপর শুরু হয় বর্বরতা।
জনির পরিবার জানায়, এখন লিবিয়া থেকে কল দিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকির পাশাপাশি ৬০ লাখ টাকা দাবি করছে নির্যাতনকারীরা। তাদের শর্ত পূরণ না করা হলে জনিকে মেরে ফেলা হবে বলেও দিয়েছে হুমকি।
জনির বাবা-কবির মোল্লা, মা লাইলী বেগম, দাদা হাবিবুর মোল্লা, দাদি হাওয়া বেগম, প্রতিবেশী চাচা ইকবাল হোসেনসহ প্রতিবেশীরা জনিকে উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
মধুখালী সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সুমন সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ভুক্তভোগি পরিবার গত ২৯ তারিখ মামলা করলে আমরা ৩০ তারিখ এই চক্রের বাংলাদেশে থাকা রাজীব নামে একজনকে আটক করেছি। তাঁকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। তাঁর তথ্যমতে এই চক্রের সকলকে আটকে আমরা সিআইডির সহযোগিতা ও আমাদের পুলিশের সেল ন্যাশানাল ক্রাইম ব্যুরোর সহযোগিতা চেয়েছি। আশা করছি, যাদের নাম এসেছে, তারা খুব শিড়গির ধরা পড়বে। এ ছাড়া জনিকে অক্ষত অবস্থায় দেশে আনার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’