মাদকমিশ্রিত পানি উৎপাদন ও বিক্রি, গ্রেপ্তার ৬
আয়ুর্বেদিক ওষুধের আড়ালে মাদকমিশ্রিত পানীয় উৎপাদন ও বিক্রয়ের অভিযোগে অন্যতম মূলহোতাসহ ছয় জনকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে চালানো এ অভিযানে বিভিন্ন ধরনের বিপুল মাদক ও যৌন উত্তেজক দ্রব্যাদি মিশ্রিত পানীয় জব্দ করা হয়। মঙ্গলবার রাতে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে র্যাব বেশ কিছু অভিভাবকদের কাছ থেকে অভিযোগ পায় যে, কামরাঙ্গীরচরে খোলা মোরা জায়গায় একটি দোকানে আয়ুর্বেদিক ওষুধের আড়ালে এক প্রকার পানীয় বিক্রি করা হয়। তাদের ছেলেরা এই আয়ুর্বেদিক ওষুধের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে এবং তা খাওয়ার পর মাদকাসক্তদের মতো আচারণ করে থাকে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, র্যাব-২-এর গোয়েন্দা দল গোপনভাবে আয়ুর্বেদিকের দোকান থেকে ওষুধ সংগ্রহ করে এবং তা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। ওই পানীয়ের মধ্যে গাজা, ইয়াবা, ডান্ডি তৈরিতে ব্যবহৃত টলুইন নামক নামক ‘ক’ শ্রেণির মাদকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এ ছাড়া তীব্র ঘুমের ওষুধ ও যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির বিভিন্ন উপকরণে, এসিড জাতীয় দ্রব্যাদিসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায় যা গ্রহণ করলে কিডনিসহ শরীরের নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এরই প্রেক্ষিতে, র্যাব-২-এর আভিযানিক দল রাজধানীর নারিন্দাতে অবস্থিত কারখানায় এবং কামরাঙ্গীরচর, কাটাবন, নাজিরা বাজার, গুলিস্তান, পুরান ঢাকার বিভিন্ন আউটলেটে অভিযান পরিচালনা করে আয়ুর্বেদিক/ভেষজ ওষুধের আড়ালে মাদকমিশ্রিত পানীয় উৎপাদন ও বিক্রয়ের অভিযোগে অন্যতম মূলহোতা ওয়াজেদ ইসলাম শান্ত (২০), মো. রাসেল (২৯), মো. হৃদয় (২৯), মুরসালিন আহম্মেদ (১৮), সবুজ মিয়া (১৮) ও মো. নান্টুকে (৫২) গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময় জব্দ করা হয় তিন হাজার ৫০০ বোতল বিভিন্ন প্রকার মাদক মিশ্রিত পানীয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রাথমিকভাবে জানা যায় যে, তারা ফার্মেসির নামে লাইসেন্স নিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আয়ুর্বেদিক ওষুধ বিক্রির আড়ালে মাদক ও যৌন উত্তেজক দ্রব্যাদি মিশ্রিত পানীয় প্রস্তু ও বিক্রি করে আসছে। কথিত আয়ুর্বেদিক পানীয়ের প্রতি বোতলের দাম ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। আরও জানা যায় যে, তার ২-৩ বছর ধরে আয়ুর্বেদিক ঔষধের ক্ষতিকর ও নেশা জাতীয় এই পানীয় উৎপাদন ও বিক্রয় করছে। তারা রাজধানীর নারিন্দাতে অবস্থিত কারখানায় উক্ত পানীয় উৎপাদন করে কামরাঙ্গীরচর, কাটাবন, নাজিরা বাজার, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন জায়গায় আউটলেটের মাধ্যমে পানীয়টি বিক্রয় করে থাকে। রাজধানীর বিভিন্ন আউটলেট থেকে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ বোতল মাদকমিশ্রিত পানীয় বিক্রয় হতো বলে জানা যায়।
অভিযুক্তরা ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে কারখানার কার্যক্রম পরিচালনা করে। বিভিন্ন সময়ে বাসা পরিবর্তনের মাধ্যমে অবস্থান পরিবর্তন করে বলে জানা যায়। অল্প দামে পাওয়া যাওয়ায় এবং নেশা জাতীয় দ্রব্যাদির উপস্থিতি থাকায় তরুণ ও যুবক সম্প্রদায়ের মধ্যে পানীয়টির চাহিদা বৃদ্ধি পায় বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও আ ন ম ইমরান খান জানান।