রেলওয়ের দুই চিফ কমাড্যান্টসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
রেলওয়েতে সিপাহী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের চিফ কমাড্যান্ট, বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব ফুয়াদ হাসান পরাগ, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক মহাব্যবস্থাপকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ রোববার (২৮ মার্চ) দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলাটি করেন সংস্থাটির উপপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক।
এ বিষয়ে দুদকের উপ-পরিচালক মো. নাজমুস সাদাত নিশ্চিত করে বলেন, সিপাহী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় মামলাটি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই আরএনবি সিপাহী নিয়োগ কমিটিতে ছিলেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে- বাংলাদেশ রেলওয়ের নিয়োগ কমিটির সদস্য ও বর্তমানে চিফ কমান্ড্যান্ট (পূর্ব) মো. জহিরুল ইসলাম (৫১), নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ও বর্তমানে চিফ কমান্ড্যান্ট (পশ্চিম) মোহা. আশাবুল ইসলাম (৩৯)। এছাড়াও মামলায় বাংলাদেশ রেলওয়ে (পশ্চিম) নিয়োগ কমিটির সদস্য, সাবেক কমান্ড্যান্ট ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বর্তমানে সহকারী সচিব ফুয়াদ হাসান পরাগ, বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক এসপিও মো. সিরাজ উল্যাহ এবং রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ ফারুক আহমেদকে (৬০) মামলার আসামি করা হয়েছে।
এছাড়াও পূর্ব রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক চিফ কমান্ড্যান্ট মো. ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সময় অপরাধ প্রমাণিত হলেও তিনি মারা যাওয়ায় তাকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে ২০১৭ সালে আরএনবির সিপাহী চতুর্থ শ্রেণির ১৮৫টি পদে নিয়োগের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। একই বছর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এবং নিয়োগ কমিটি গঠন করা হয়। আসামিরা নিয়োগ কমিটিতে ছিলেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে অবৈধভাবে নিজেরা লাভবান হয়ে বা অন্যকে লাভবান করার অসাধু অভিপ্রায়ে নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, সদস্য ও অনুমোদনকারী হিসেবে ন্যস্ত ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এছাড়া পরিকল্পিতভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে বিশেষ কোটার প্রার্থী যেমন মুক্তিযোদ্ধা কোটা, পোষ্য কোটার প্রার্থীদেরকে পাসের কাছাকাছি নম্বর দিয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ দেখিয়ে ওই কোটায় পছন্দের প্রার্থীদেরকে মৌখিক পরীক্ষায় পাস দেখিয়ে চাকরি দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।
এছাড়া বিভাগীয় কোটা, জেলা কোটা, পোষ্য কোটাসহ অন্যান্য কোটা বিধি অনুযায়ী যথাযথভাবে প্রতিপালন না করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে অন্য কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা।