মিয়ানমারের গোলাবর্ষণের ঘটনায় মির্জা ফখরুলের উদ্বেগ
মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান ও ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে বাংলাদেশের সীমানার ভেতর গোলাবর্ষণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে দলের পক্ষে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব। এর আগে সোমবার বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, পর পর এই ধরনের মর্টারশেল নিক্ষেপ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ওপর মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। এই অনির্বাচিত সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে বাংলাদেশের সীমান্তে এই সব ঘটনা ঘটছে। সরকারের ব্যর্থতার কারণে এখন পর্যন্ত সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন সমস্যার সমাধান না হওয়া এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের কোনও ইতিবাচক কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। সভায় এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানায়।
সভায় দেশের চরম অর্থনৈতিক সংকটের মাঝে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রচার চালাতে জনগণের ১৩২ কোটি টাকার অর্থ অপচয়ের এলইডি প্রকল্প গ্রহণের তীব্র সমালোচনা করা হয়। সভা মনে করে শুধুমাত্র দুর্নীতি ও নির্বাচনের পূর্বে ফায়দা নেওয়ার জন্য এই ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সারা দেশে বিএনপি আয়োজিত অনুষ্ঠান ও র্যালির ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী ও কতিপয় দলবাজ পুলিশ সদস্যদের যৌথ হামলা, ভাঙচুর, হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জে পুলিশের কর্মকর্তা জনৈক কনক কর্তৃক বেআইনিভাবে চাইনিজ রাইফেল দিয়ে গুলিবর্ষণ করে যুবদলকর্মী শাওনকে হত্যা এবং অসংখ্য নেতাকর্মীদের আহত হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও একই দিনে সিরাজগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নড়াইল, কিশোরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, বরগুনা, ফরিদপুরসহ আরও বেশ কয়েকটি জেলায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, বরগুনার সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম মনিসহ অসংখ্য নেতাকর্মী মারাত্মকভাবে আহত হয়। এই সব ঘটনায় পুলিশ বেশির ভাগ জায়গায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করে এবং পরবর্তীকালে কয়েক হাজার নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করে যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনির্বাচিত আওয়ামী লীগের এই অবৈধ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হত্যা, খুন, নির্যাতন শুরু করেছে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নীলনকশা তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, সভায় অবৈধ সরকারের বিরোধী দলকে নির্মূল করার হীন চক্রান্তের তীব্র সমালোচনা করা হয়। একদিকে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আচরণের কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা অন্যদিকে বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর গুলিবর্ষণ করে নেতাকর্মীদের হত্যা ও নির্যাতন এই সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্রই উদঘাটন করছে।
সভায় অবিলম্বে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ, এই অবৈধ সরকারের পদত্যাগ দাবি করা হয়; বলেন বিএনপি মহাসচিব। সভায় সকল হত্যাকাণ্ড, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন আরও বেগবান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।