ইরানের পারমাণবিক চুক্তি ইসরায়েলের ‘আক্রমণ’ থামাবে না : মোসাড
ইসরায়েলি স্পাই এজেন্সি মোসাডের প্রধান ডেভিড বার্নেয়া বলেছেন, বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক চুক্তির পুনরাবর্তন দেশটিতে ইসরায়েলের আক্রমণ থেকে কোনো ছাড় দেবে না।
ইসরায়েল আগে থেকেই ইরানের ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির বিরোধিতা করে আসছে, যা তাদের ভাষায় এই চুক্তি দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধে বেশি কিছু করবে না। মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ইরানের শত্রুভাবাপন্ন কর্মকাণ্ড ঠেকাতে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলবেও না। খবর আল জাজিরার।
গত জুন মাসে মোসাডের দায়িত্ব নেওয়ার পর দেওয়া প্রথম বক্তব্যে ডেভিড বার্নেয়া বলেন, ‘আমরা এই হেঁয়ালিতে জড়াব না। এমনকি যদি চুক্তিটি স্বাক্ষরিতও হয়, মোসাডের অভিযানের ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না’। তিনি বিভিন্ন সময়ে বিশ্বজুড়ে ইরানের মদদে চালানো হামলা প্রতিহত করার দাবি করেন।
তার উদ্বৃতি দিয়ে জেরুজালেম পোস্ট লেখে, ‘আমরা কয়েক ডজন ইরানি হামলা ব্যর্থ করে দিয়েছি। এই কাজ ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের নয় বরং দেশটিকে সন্ত্রাসী প্রজাতন্ত্র বলা যায়।’
বার্নেয়া আরও বলেন, ‘ইরানের দাবি অনুসারে দেশটির গোপন পারমাণবিক তৎপরতা বন্ধে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) তদন্ত বন্ধ করা ঠিক হবে না, কেননা এটা পারমাণবিক শক্তির প্রতিযোগিতাকে আরও বাড়িয়ে দেবে।’
তিনি বলেন, ‘যদি পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়ে যায়, তাহলে ইরানের সন্ত্রাসী তৎপরতাকে আর থামানো যাবে না।’ তার মতে দেশটির ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিলে তাদের রাজস্ব আয়ের ধারা বেড়ে যাবে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির গতি ধীর করতে ইসরায়েল বছরের পর বছর ধরে দেশটির সঙ্গে একধরনের ছায়া যুদ্ধে জড়িয়ে আছে। যদিও আক্রমণের কথা দেশটি স্বীকার করে না।
২০২০ সালে আততায়ীর হাতে ইরানের নিউক্লিয়ার পদার্থবিদ মোহসেন ফাকরিজাদের নিহতের ঘটনা, তাছাড়া সম্প্রতি একজন প্রকৌশলী, একজন সামরিক কর্মকর্তা ও একজন অ্যারোনটিক্যাল বিজ্ঞানী হত্যার পিছনে ইসরায়েল জড়িত বলে জোর গুজব রয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কিনানি মোসাড প্রধানের বক্তব্যের জবাবে তেহরান টাইমসকে বলেন, ‘একটি ক্ষমতাসীন সন্ত্রাসী সরকারের কাছ থেকে আমরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছাড়া আর কিছু আশা করি না।’
ইরানের পুনরুজ্জীবিত পারমাণবিক চুক্তির মূল লক্ষ্য হচ্ছে ইরানকে পারমাণবিক বোমা তৈরির কাজ থেকে বিরত রাখা; যার প্রধান উদ্যোক্তা যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া রয়েছে চুক্তি স্বাক্ষরকারী আরও পাঁচটি দেশ-চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্য; যাদের সংক্ষেপে পি ৫+১ বলা হয়ে থাকে।