নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে হত্যা : ৯ জনের যাবজ্জীবন
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে আইয়ুব নবী ওরফ নাউদ নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে নয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর পর আজ মঙ্গলবার বিকেলে অতিরিক্ত দায়রা জজ (২য় আদালত) আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান মুন্নী এই রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ইউসুফ আলী সরদার এবং আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আলহাজ অ্যাডভোকেট এম এ মতিন।
সাজাপ্রাপ্তরা আসামি হলেন, সাঁথিয়ার ভিটাপাড়া গ্রামের মো. আনার আলী, মো. শাহাদাত হোসেন, গকুল, মো. বাছেদ, মো. ফুলচাঁদ ও তার মা মোছা. আলেয়া খাতুন, মিন্টু আজম, খোকন মিয়া ও শামীম হোসেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নিহত আইয়ুব নবী ওরফে নাউদের সঙ্গে আসামিদের নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে শত্রুতা ছিল। এর জেরে ২০১১ সালের ২৬ জুলাই রাতে আসামিরা আইয়ুব নবীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরের দিন ২৭ জুলাই তার খণ্ডিত মৃতদেহ ভিটাবাড়ী নদীর পানিতে ও বাইছের নৌকার উপর পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় সাতজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করে। অপরদিকে একই ঘটনায় নিহত আইয়ুব নবীর স্ত্রী মোছা. সুলতানা বেগম বাদী হয়ে আদালতে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরেকটি হত্যা মামলা করেন। উভয় মামলার তদন্ত শেষে একই বছরের ২৪ নভেম্বর ১০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। মামলা চলাকালীন এক আসামির মৃত্যু হয়। দীর্ঘ সাক্ষ্য ও শুনানি শেষে আজকে রায় ঘোষণা করা হলো।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইউসুফ আলী সরদার বলেন, ‘এটি একটি পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সাক্ষ্য ও তদন্তে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আদালত তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিয়েছেন। আমরা এই রায়ে অত্যন্ত সন্তুষ্ট। এর মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম এ মতিন বলেন, ‘আমার মক্কেলরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’