নওগাঁয় সাড়ে ছয় একর জমির ধান পুড়িয়ে দিলো দুর্বৃত্তরা
নওগাঁর ধামইরহাটে কৃষকের সাড়ে ছয় একর জমিতে রোপণকৃত আমন ধান গাছে ক্ষতিকারক আগাছানাশক স্প্রে করে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ধামইরহাট ইউনিয়নের রামরামপুর ও আঙ্গরত নামক মাঠে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কৃষক অপরাধীদের সুষ্টু বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন- আঙ্গরত কলোনীর শরিফুল ইসলাম (৪৪), ফারুক হোসেন (৩৪), পিএ বর্মণ (৬০) এবং তেলিপাড়ার মিলন হাসদা (২৯)।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধামইরহাট ইউনিয়নের আঙ্গরত (রামরামপুর) গ্রামের কৃষক মো. শফিউল আলম রাজ দেওয়ান ও তাঁর ভাই রাসেল দেওয়ান মিলে রামরামপুর মৌজায় সাড়ে তিন একর এবং আঙ্গরত মৌজায় তিন একর জমি নিজে কিছু অংশ এবং বর্গাচাষীদের দিয়ে বাকী অংশের জমিতে আমন ধান চাষ করেন। গত ১৮ অক্টোবরে দুই মৌজার মোট ১৯ বিঘা জমিতে রাতের বেলায় কে বা কারা ক্ষতিকর আগাছানাশক স্প্রে করে। পরের দিন সকালে বর্গাচাষী জমিতে গিয়ে দেখেন ধানগাছগুলো সোনালী বর্ণ ধারণ করে মরে যাচ্ছে। প্রতি বছর ওই জমি থেকে প্রায় ৩৬০ থেকে ৩৮০ মণ আমন ধান উৎপাদন হতো। এতে তাঁদের প্রায় চার লাখ টাকার ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
আঙ্গরত কলোনী গ্রামের বর্গাচাষী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘সোয়া দুই একর জমিতে ঋণ করে স্বর্ণা-৫ জাতের ধান চাষ করেছি। কিন্তু দুর্বৃত্তরা রাতে ধান গাছে ক্ষতিকারক আগাছানাশক স্প্রে করে স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে।’
রামরামপুর তেলিপাড়া গ্রামের বর্গাচাষী ও ভ্যান চালক মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘রাজ দেওয়ানের কাছ থেকে বর্গা নিয়ে এক একর জমিতে আমন ধান রোপন করি। ভ্যান চালিয়ে অনেক কষ্ট করে ধান চাষ করেছি। কিন্তু মানুষরূপি পশুরা ধানগাছগুলো পুড়িয়ে দেওয়ায় আমি এখন চোখে অন্ধকার দেখছি।’
ওই জমির মালিক শফিউল আলম রাজ দেওয়ান বলেন, ‘আমরা দুই ভাই একত্রে জমিগুলো চাষ করেছি। কিছু জমি বর্গা দিয়েছি। দুই মৌজায় মোট ১৯ বিঘা জমির স্বর্ণা-৫ জাতের আমন ধান গাছে ক্ষতিকর আগাছানাশক স্প্রে করায় পুড়ে গেছে। প্রতি বছর ১৯ বিঘা জমিতে থেকে প্রায় চারশ মণ ধান পাওয়া যেতো। এবার এক ছটাক ধানও পাওয়া যাবে না। এতে প্রায় চার লাখ টাকার ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’ এ ব্যাপারে শফিউল আলম বাদী হয়ে বড় চাচা দেওয়ান সিদ্দিকুর রহমানকে (৬৫) আসামি করে মোট ১৩ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, ‘অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে পুলিশের একটি দল ক্ষতিগ্রস্ত ধান ক্ষেত পরিদর্শন করে। নিঃসন্দেহে এটি একটি নিন্দনীয় কাজ ও মারাত্মক অপরাধ। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামিদের আটক করার চেষ্টা চলছে।’