দেশের ধ্বংস ও ক্ষতি করেছে আওয়ামী লীগ : মির্জা ফখরুল
আওয়ামী লীগ বারবার দেশের ধ্বংস ও ক্ষতিসাধন করেছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বলা হচ্ছে দেশ নাকি বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তাদের নাকি এখন পয়সা নেই। তো ৪২ বিলিয়ন রিজার্ভ গেলো কোথায়? আসলে তারা দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করেছে। এভাবে গোটা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে।’
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ১৯৯৯ সালের ১৮ অক্টোবর জেডআরএফ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট তারেক রহমান ভার্চুয়াল বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে জেডআরএফ প্রতিষ্ঠার পর থেকে যেসব মানবসেবা মূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে তার একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জিয়াউর রহমান এমন সময় দেশে আবির্ভূত হয়েছিলেন, যখন যুদ্ধের দামামা চলছিল। কেউ নেতৃত্বে নেই। তখন একজন অখ্যাত মেজর জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে ভেসে আসে স্বাধীনতার ঘোষণা। যা দেশবাসীকে উজ্জীবিত ও উদ্বেলিত করেছিল। তিনি সবাইকে নিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীনের পর তিনি আবারও সেনাবাহিনীতে ফিরে যান। আবারও ৭ নভেম্বর দেশের সংকটকালে তিনি নেতৃত্ব দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে। কারণ তিনি তো আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা থেকে দেশকে উদ্ধার করেছিলেন। সেজন্য মার্কিন কূটনীতিক উইলিয়াম মাইলাম বলেছেন, যদি জিয়াউর রহমান মে মাসের আগে মারা যেতেন তাহলে আরও কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হতো। হেনরি কিসিঞ্জার বলেছিলেন বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি। কিন্তু জিয়াউর রহমান সেখান থেকে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে বিদেশে খাদ্য রপ্তানি করেছিলেন। তিনি নতুন প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আশা জাগিয়েছেন। পথে পথে ঘুরে জনগণকে জাগিয়ে তুলেছেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হাতে কলমে কাজ করেছেন। তারই উত্তরসূরি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। যিনি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের পতাকা তুলে ধরে সারা বাংলাদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন। নয় বছর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখনও তিনি গৃহবন্দী। পতাকা কিন্তু থেমে নেই। আজকে সেই পতাকা তুলে নিয়েছেন তাদেরই সন্তান তারেক রহমান। তিনি ৮ হাজার মাইল দূরে থেকেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে দেশের জনগণ জেগে উঠেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে আছি। আমরা টেকব্যাক বাংলাদেশ চাই। যেখানে গণতন্ত্র থাকবে। স্বাধীনতা থাকবে। যেখানে কোনো মা-বোন ধর্ষিতা হবে না। সেই বাংলাদেশ আমরা ফিরে পেতে চাই। আজকে পঞ্চাশ বছর পর কেন অধিকার ফিরে পেতে লড়াই করতে হবে? কারণ আওয়ামী সেই স্বপ্নকে ধ্বংস করেছে। ১৯৭২ সালে বাচ্চাদের জন্য বিদেশ থেকে আনা দুধ ও কম্বল চুরি করেছে। সেজন্যই শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, সবাই কম্বল পেলো তো আমার কম্বল কোথায়?’
জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম ও ব্যারিস্টার মীর হেলালের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, অধ্যাপক ডা. সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভুইয়া, মোস্তফা কামাল মজুমদার ও রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ডা. পারভেজ রেজা কাকন যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও আব্দুল মোনায়েম মুন্না প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে কুরআন তিলাওয়াত করেন কৃষিবিদ আব্দুর রহমান নূরী। আরও উপস্থিত ছিলেন- অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, ডা. এএস হায়দার পারভেজ, অধ্যাপক ড. আবদুল করিম, অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রশিদ, কৃষিবিদ আনোয়ারুন্নবী মজুমদার বাবলা, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, গোলাম হাফিজ কেনেডী, কামরুজ্জামান রতন, কাদের গণি চৌধুরী, ডা. সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিস সিমকী, ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, এটিএম আব্দুল বারী ড্যানী, অধ্যাপক ডা. মো. আনোয়ারুল হক, অধ্যাপক ড. শেখ মনির উদ্দিন, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, অধ্যাপক ড. মো. নুরুল ইসলাম, ডা. একেএম মাসুদ আখতার জীতু, ডা. মো. ফখরুজ্জামান ফখরুল, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, কেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু, খান মো. মনোয়ারুল ইসলাম শিমুল, ড. খায়রুল ইসলাম, কৃষিবিদ শফিউল আলম দিদার, কৃষিবিদ কেএম সানোয়ার আলম, মিসেস শামীমা রাহিম, ডা. সাজিদ ইমতিয়াজ, প্রকৌশলী মো. আইয়ুব হোসেন মুকুল, রাকিবুল ইসলাম, আসিফ হোসেন রচি, অধ্যক্ষ শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ জেডআরএফের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।